প্রতীকী ছবি।
অনেক বাবা-মা চান, তাঁদের সন্তান লম্বা হোক। তাই প্রকৃতির উপর পুরোপুরি ভরসা না রেখে তাঁরা নানা উপায়ে সন্তানের উচ্চতা বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত পদ্ধতি হল শিশুদের ঝুলে থাকতে বলা। অনেকেরই ধারণা, ঝুলে থাকলে উচ্চতা বাড়ে। কিন্তু এই ধারণা কি আদৌ ঠিক?
মানুষের উচ্চতা বৃদ্ধি হয় হরমোনের কারণে। জন্মের পর থেকেই এই হরমোনের ক্ষরণ হতে থাকে। তার প্রভাবে ধীরে ধীরে উচ্চতা বাড়ে। কিন্তু এই হরমোনের ক্ষরণ বিপুল পরিমাণে বেড়ে যায় ১২-১৩ বছর বয়সে। এই বয়সে এসে শিশুদের উচ্চতা অত্যন্ত দ্রুত বাড়ে। ১৬-১৭ বয়সে এসে বেশির ভাগেরই এই হরমোনের ক্ষরণের হার কমতে থাকে। ফলে উচ্চতাও আর দ্রুত হারে বাড়ে না। তবে অল্প পরিমাণে ক্ষরণ এর পরেও হতে পারে। ২০-২১ বছর বয়সে এসে এই হরমোনের ক্ষরণ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তবে এর ব্যতিক্রম নেই, তা নয়।
কারও কারও ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত উচ্চতা বাড়ে। বৃদ্ধির হার যদিও খুবই কমে যায়। তবে এর পাশাপাশি কয়েকটি বিষয় উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ঘুম, খাদ্যাভ্যাস এবং শরীরচর্চা।
নিয়মিত আট ঘণ্টা বা তার বেশি ঘুমোলে উচ্চতা বাড়ে। যে শিশুরা পর্যাপ্ত সময় ঘুমায় না, তাদের উচ্চতা বৃদ্ধি নিয়ে কিছুটা চিন্তা থেকেই যায়। কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেলে উচ্চতা বৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়ে। এর পাশাপাশি উচ্চতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ব্যায়াম। বিভিন্ন ধরনের ফ্রিহ্যান্ড শরীরচর্চা, যোগাসন করলে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে। তাতেও উচ্চতা বৃদ্ধির হরমোনটির ক্ষরণ বাড়তে পারে। কিন্তু এর সঙ্গে ঝুলে থাকার কোনও সম্পর্ক নেই।
ঝুলে থাকলে উচ্চতা বাড়বে এমন কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ ক্ষণ ঝুলে থাকলে হাতের পেশির ক্ষমতা বাড়তে পারে। ছাতি এবং কোমরের হাড় সুগঠিত হয়। এগুলি শরীরের জন্য খুব লাভের। কিন্তু এর ফলে উচ্চতা বৃদ্ধি হয় কি না, সে সম্পর্কে এখনও কোনও স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।