দরকার প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম। প্রতীকী ছবি।
কোভিডে প্রাথমিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে। আর তাতে বাড়ে ক্লান্তি। সংক্রমণ থাকার সময়ে তো বটেই, সুস্থ হয়ে যাওয়ার বহু দিন পরেও এই ক্লান্তি কাটতে চায় না অনেকের ক্ষেত্রেই। বিষয়টি এমন কিছু বিরল নয়। ফলে আপনার ক্ষেত্রে যদি এমনই হয়, তা হলে চিন্তার কিছু নেই। চিকিৎসকের পরামর্শে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই দ্রুত ক্লান্তি কাটিয়ে আবার আগের জীবনে ফিরে যাওয়া সম্ভব।
প্রথমত মনে রাখতে হবে, সংক্রমণ সেরে যাওয়া মানেই, আপনি পুরোপুরি সুস্থ নন। আপনার ফুসফুসের যে ক্ষতি হয়েছে, তা-ও পুরোপুরি সারেনি। অর্থাৎ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রতি মুহূর্তে আপনার যতটা অক্সিজেনের প্রয়োজন, তার জোগান দিতে ফুসফুস পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই সেরে ওঠার সময়েও ফুসফুসে বেশি চাপ দেবেন না। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, ‘‘যতটা সম্ভব বিশ্রাম দিন শরীরকে। অন্তত ২ সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে পারলে ভাল। তবে যাঁদের সমস্যা বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে অন্তত ১ মাস বিশ্রাম নেওয়া উচিত।’’
শুধু বিশ্রাম নিলেই হবে না। তার সঙ্গে দরকার পুষ্টিকর খাবারও। ‘‘চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শে এমন খাবার খান, যা খেলে শরীর তাড়াতাড়ি চাঙ্গা হয়ে উঠবে। ফল খেতে পারলে ভাল, ’’ বলছেন সুবর্ণ। এই সময়ে প্যাকেটের ভাজাভুজি, অতিরিক্ত মিষ্টি বা তৈলাক্ত খাবার খেতে বারণ করেন চিকিৎসকেরা। এই ধরনের খাবার শরীরে মেদের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, ক্লান্তির কাটানোর বদলে বাড়িয়েও দিতে পারে।
কোভিড সারিয়ে ওঠার পর কি অফিসের কাজ শুরু করে দিয়েছেন? বাড়ি থেকেই কাজ করছেন? সে ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত পরিশ্রম আপনাকে বেশি মাত্রায় ক্লান্ত করে দেবে। তাই নিয়মমাফিক কাজ করতেই পারেন। কিন্তু তার মাঝে ১০-১৫ মিনিট করে বিশ্রাম নিয়ে নিন। না হলে সার্বিক ভাবে গোটা শরীরেই তার প্রভাব পড়বে। ক্লান্তি বাড়তেই থাকবে।
তবে এর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কতগুলি পরীক্ষাও করতে হবে বলে জানাচ্ছেন সুবর্ণ গোস্বামী। তাঁর মতে, কোভিড সেরে যাওয়ার পর আপাত ভাবে সব ঠিক হয়ে গেলেও কিছু সমস্যা থেকেই যায়। সেগুলি বোঝার জন্য রক্তপরীক্ষা করানো দরকারি। ‘‘অনেক সময়েই সংক্রমণ সেরে যাওয়ার কিছু দিন পর আবার সাইটোকাইন বাড়তে থাকে। বা রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা দেখা দেয়। রক্ত জমাট বাঁধছে কি না তা বুঝতে ডি ডাইমার পরীক্ষা করানো দরকারি। না হলে পরে বড় সমস্যা হতে পারে।’’ তাঁর মতে কোভিড সেরে যাওয়ার মাস খানেক পর পর্যন্ত চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এবং পরামর্শ নেওয়াটা দরকারি।