মনের সুখে মলত্যাগ আর নয়! ছবি: সংগৃহীত।
পর্বতারোহীদের কাছে এভারেস্ট জয় স্বপ্নের মতোই। সেই স্বপ্নকে সত্যি করতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বার বার দুর্গম সেই গিরিপথে ছুটে যান দেশ-বিদেশের পর্বতারোহীরা। মানুষের আনাগোনা বেড়ে চলায় পাহাড়ের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার অভিযোগও উঠছে। তাই এভারেস্ট এবং লোৎসে পর্বত অভিযানে গেলে এ বার থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করার ব্যাগ কিনতে হবে। পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই নতুন এই নিয়ম চালু করতে চলেছে স্থানীয় পাসাং লামু গ্রামীণ পুরসভা।
বিগত বছরের তুলনায় এখন এভারেস্টে আরোহীদের আনাগোনা বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে আবর্জনাও। সেই সব বর্জ্য থেকেই ক্রমশ দুর্গন্ধময় হয়ে উঠছে পাহাড়ের পরিবেশ। প্রশাসনের কাছে যা সত্যিই চিন্তার বিষয়। তাই পাহাড়ের পরিবেশরক্ষা করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় পুরসভা। পুরসভার চেয়ারম্যান মিঙ্গমা শেরপা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পাহাড়ের গায়ে নানা রকম বর্জ্য পড়ে থাকার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে পর্বতারোহীদের মধ্যেও অসন্তোষ জন্মাচ্ছে। তাঁদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করেই পর্বতারোহীদের সঙ্গে বর্জ্য জমা করার ব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিযানে যাওয়ার আগে বেসক্যাম্প থেকেই সেই ব্যাগ সংগ্রহ করতে হবে। যাত্রাপথে মল, মূত্র-সহ যাবতীয় বর্জ্য জমা রাখতে হবে সেই ব্যাগে। অভিযান শেষে বেসক্যাম্পে ফিরে এসে সেই ব্যাগ ফেলতে হবে। ফিরে আসার পর প্রত্যেক অভিযাত্রীর ব্যাগ নিরীক্ষণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
পাহাড়ের আবহাওয়া এবং উচ্চতার সঙ্গে শরীরকে মানিয়ে নিতে বেশ কিছু দিন বেসক্যাম্পে থাকতে হয় পর্বতারোহীদের। সেখানেই তাঁবু খাটিয়ে আলাদা শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়। সেই শৌচাগারের সঙ্গে থাকে ব্যারেল। যার মধ্যে বর্জ্য জমা হয়। শৃঙ্গে ওঠার সময়ে যাত্রাপথে মল কিংবা মূত্রত্যাগের প্রয়োজন পড়লে তখন বেসক্যাম্পের শৌচাগারে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই অপেক্ষাকৃত কম বরফ যেখানে, সেখানেই গর্ত করে প্রাকৃতিক ক্রিয়াকলাপ সারতে হয়। তাপমাত্রার কারণে সেই সব বর্জ্য মাটির সঙ্গে মিশতে পারে না। বরফ চুঁইয়ে পড়া জলের সঙ্গে মিশে তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে দূষণ বাড়ছে। বিদেশের পর্বতারোহীদের কাছে ভারতীয়দের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে।