মাচা না সজনেপাতার চা, ত্বকের জন্য কোনটি বেশি উপকারী? ছবি: সংগৃহীত।
সকালে উঠে এক কাপ গরম চা বা কফি না হলে দিন শুরু হয় না অনেকেরই। কিন্তু ঘন দুধ বা চা বা চিনি ছাড়া লিকার চা নয়, ইদানীং স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজন চুমুক দেন গ্রিন টি থেকে ভেষজ ‘চা’-তেও।
শুধু শরীর চনমনে করা বা ক্লান্তি কাটানো নয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, ত্বকের জেল্লা বাড়াতে, চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করতেও এখন রকমারি চা খাওয়ার চল হয়েছে। সেই চায়ে যে চা পাতা থাকতেই হবে, এমন নয়। বরং বিভিন্ন উপকরণে তৈরি এই পানীয় চা বলেই পরিচিত।
তেমনই একটি চা হল ‘মোরিঙ্গা চা’, সজনেপাতার গুঁড়ো দিয়ে তা তৈরি। আর একটি হল মাচা চা। এটি অবশ্য প্রকৃত অর্থে চা-ই। তবে দৈনন্দিন যে ধরনের চা খেতে অভ্যস্ত সকলে, ঠিক তেমন নয়। ‘ক্যামেলিয়া সিনেনসিস’ নামক চা পাতা থেকে এটি তৈরি। বলা যায়, গ্রিন টি-এর একটি ধরন হল মাচা। তবে গ্রিন টি-এর সঙ্গে মাচার তফাত অনেকটাই। প্রক্রিয়াকরণেই রয়েছে পার্থক্য।
মাচার গুণপনা
ঘন সবুজ সফেন মাচা চা বহু যুগ ধরে জাপানে খাওয়া হত। গুণ বিচারে গ্রিন টি-কে গুনে গুনে দশ গোল দিতে পারে এই চা। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীরের জন্য তো বটেই, ত্বকের জন্যও ভাল। শরীর চনমনে রাখতে সাহায্য করে মাচা। ওজন ঝরানোর পাশাপাশি হার্ট, লিভার ভাল রাখতেও সাহায্য করে পানীয়টি।
জাপানে সেরামিকের পাত্রে মাচা তৈরি হয়। সবুজ মাচা গুঁড়োয় ঈষদুষ্ণ জল মিশিয়ে বাঁশের তৈরি হুইস্কারের ব্যবহারে তা ফেটিয়ে ফেনার মতো করে নেওয়া হয়।
মোরিঙ্গা চায়ের গুণ
দেশ-বিদেশে লোকে ‘মোরিঙ্গা’ নামে চিনলেও বাংলায় গাছটি সজনে গাছ নামেই পরিচিত। এর ডাঁটা, ফুল, পাতা— সবই উপকারী। ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালশিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজে ভরপুর সজনেপাতা। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে। ত্বকের প্রয়োজনীয় কোলাজ়েন উৎপাদনেও সাহায্য করে এটি।
ত্বক ভাল রাখতে কোনটি ভাল?
মাচাতেও রয়েছে জ়িঙ্ক, ভিটামিন এ, সি, ই, কে। সজনেপাতার গুঁড়োতেও মেলে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ। দু’টিতেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। ফলে গুণের বিচারে কোনওটাই পিছিয়ে নেই। ত্বক ভাল রাখতে যে কোনও একটি খাওয়া যায়। মাচা শরীর তরতাজা রাখতে বিশেষ সহায়ক। সজনেপাতার চা শরীরে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। এ বার পুরোটাই নির্ভর করবে যিনি খাচ্ছেন তাঁর পছন্দ ও স্বাদের বিবেচনার উপর।
তবে যে কোনও নতুন পানীয় নিয়মিত খাওয়ার আগে অল্প খেয়ে দেখে নেওয়া দরকার, শরীরে কোনও বিরূপ প্রভাব পড়ছে কি না। তা ছাড়া উপকারী হলেও এটি দিনে এক বার খাওয়াই যথেষ্ট।