এ পুজোয় কৌশানীর সাজ-কাহন। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
ভরা আশ্বিনেও চারদিকে যেন বসন্তের রং। সৌজন্যে কৌশানী মুখোপাধ্যায়। খোলা চুল, লাল শাড়িতে ‘ডাকাতিয়া বাঁশি’ গানের ছন্দে শরীরী বিভঙ্গে ঝড় তুলেছেন অভিনেত্রী। পুজোর সময়ে মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন ছবি ‘বহুরূপী’। ছবিতে মুখ্য চরিত্র ‘ঝিমলি’র ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কৌশানী। ছবিমুক্তির আগে প্রচারকাজে নায়িকার ব্যস্তস্তা তুঙ্গে। তারই মাঝে পুজোর সাজপোশাক নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে আড্ডায় বসলেন কৌশানী।
পুজোর কেনাকাটার প্রসঙ্গ উঠলেই ছেলেবেলার দিনগুলি বড্ড মনে পড়ে কৌশানীর। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘ছেলেবেলার দিনগুলিই ভাল ছিল। মা, মাসি আর বোনের সঙ্গে নিউ মার্কেটে যেতাম কেনাকাটা করতে। মা-মাসি চাইত আমি আর বোন পুজোয় একই রকম জামাকাপড় পরি। তাই ইচ্ছে করেই একই জামা দু’টি করে কেনা হত। পুজোয় দু’টি ভিন্ন রঙের একই রকম জামা পরে ঘুরে বেড়াতাম দুই বোনে। পুজোর কেনাকাটার পর নিউ মার্কেটে খাওয়াদাওয়াটা ছিল মাস্ট।’’
ছোটবেলায় পুজোর জামাকাপড় নিয়ে আলাদাই উন্মাদনা ছিল কৌশানীর। ভাইবোন আর বন্ধুবান্ধবের থেকে বেশি জামা হল কি না, তা নিয়ে কিন্তু পঞ্চমীর রাত অবধি একটা উদ্বেগ কাজ করত তাঁর মনের মধ্যে। কৌশানী বলেন, ‘‘একটা সময় আমি পুজোর দিনগুলিতে রোজ তিনটে করে জামা পরতাম। পঞ্চমী থেকে দশমীর জন্য মোট ১৫টি জামা বরাদ্দ থাকত। তবে এখন সে সব অতীত। এ বারের পুজোটা আলাদা। পুজোয় নিজের জন্য আলাদা করে কেনাকাটা করব সেই মানসিক পরিস্থিতিও নেই। প্রিয়জনদের জন্য কেনাকাটা করলেও নিজের জন্য এখনও কিছুই কিনিনি। তা ছাড়া, এখন ছবির প্রচারের কাজে ব্যস্ত, তাই আলাদা করে কেনাকাটা করার সময়ও হাতে নেই। তবে সারা বছর ধরে এমন অনেক পোশাক পেয়েছি বা কিনেছি, যেগুলি এখনও পরা হয়নি। তার মধ্যে থেকেই পুজোর জামাকাপড় বেছে নেব।’’
কেমন হবে কৌশানীর এ বারের পুজোর সাজ?
চতুর্থীর দিন কৌশানীর বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। তা নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বারও বেশ উত্তেজিত কৌশানী। অভিনেত্রী বলেন, ‘‘বাড়িতে পুজো শুরু হলেই আমার পুজোর সাজগোজ শুরু হয়ে যায়। পুজোর ক’টা দিন শাড়িই থাকে আমার পছন্দের তালিকা। সারা বছর শুটিং ছাড়া তেমন একটা শাড়ি পরা হয় না। তাই পুজোর সময় জমিয়ে শাড়ি পরে নিই। চতুর্থীর দিন বাড়ির পুজোয় সাবেক সাজেই সাজব। ইদানীং হ্যান্ডলুম শাড়ি পরতে বেশ ভাল লাগে। ষষ্ঠী-সপ্তমীর দিন হ্যান্ডলুমের শাড়ি পরতে পারি। অষ্টমীর সাজটা কিন্তু আমার কাছে খুব স্পেশ্যাল। অষ্টমীর সাজে সাবেকিয়ানা থাকাবেই। প্রতি বছরের মতো এ বারও কাঞ্জিভরম শাড়ি আর সোনার গয়নায় সাজব। নবমীর সকালে চিকনের কারুকাজ করা শাড়ি পরতে পারি। এ বছর টিস্যু শাড়ির বেশ রমরমা, তাই নবমীর রাতের জন্য টিস্যু অরগ্যানজ়া শাড়ি রাখতেই পারি পছন্দের তালিকায়।’’
পুজোর নায়িকাদের মতো কী ভাবে সাজবেন? শিখিয়ে দিলেন কৌশানী—
১) সারা বছর পশ্চিমি পোশাক পরলেও পুজোর সময়ে সাবেক পোশাক নিয়েই নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষা করা যেতে পারে। বিশেষ করে অষ্টমীর দিন একটা সিল্কের শাড়়ি আর সোনালি গয়না দিয়েই ভিড়ের মাঝে নজর কাড়তে পারেন।
২) অনেকেই ভারী কারুকাজ করা শাড়ি পরতে পছন্দ করেন না। হালকা কারুকাজের শাড়ির সঙ্গে একটা জমকালো ব্লাউজ় আর ভারী গয়না পরে ফেলতে পারেন।
৩) খুব ভারী কারুকাজের শাড়ি হলে কিন্তু খুব বেশি গয়না না পরলেও চলবে। একটা জমকালো শাড়ির সঙ্গে কানে দুল পরলেই সাজ সম্পূর্ণ হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে চুলের বাঁধন নিয়ে একটু খেলা করাই যায়।
৪) ব্লাউজ়ের কাটিং ও ব্লাউজ় বাছইয়ের ক্ষেত্রে একটু সজাগ থাকতে হবে। ছিমছাম শাড়ি হলেও ডিজ়াইনার ব্লাউজ় দিয়ে পরলে লুকটাই বদলে যায় পুরো।
৫) পুজোর সময়ে বেরোতে হলে খুব চড়া মেকআপ না করে হালকা মেকআপ করাই ভাল। বেস মেকআপ ছিমছাম হলেও চোখের মেকআপ একটু যত্ন নিয়ে করলেই সাজে চমক আসে।