মনখারাপের সময়ে ফোন করলে সাহায্য পাবেন কাদের থেকে?
শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর ‘ওয়ার্ল্ড সুইসাইড প্রিভেনশনস ডে’। বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। অন্য বছরের তুলনায় চলতি বছরের এই বিশেষ দিনটির গুরুত্ব কিছুটা হলেও বেশি। কারণ একাধিক পরিসংখ্যান বলছে, অতিমারির সময়ে উদ্বেগ, অবসাদের মতো সমস্যা বেড়েছে মানুষের। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মন খারাপের সময়ে সাহায্য চেয়ে বিভিন্ন হেল্পলাইনে ফোনের সংখ্যাও।
নেটদুনিয়ায় খুঁজলে এমন একাধিক হেল্পলাইন নম্বর পাওয়া যায়। তার কতগুলি কাজ করে? বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসের আগে সেই সব নম্বরে ফোন করে দেখল আনন্দবাজার অনলাইন। কী শোনা গেল ফোনের উল্টো দিক থেকে?
নেটদুনিয়ায় ঘাঁটাঘাঁটি করে বা গুগলে সন্ধান চালিয়ে এমন যে ক’টি হেল্পলাইন নম্বরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, সেগুলির বেশির ভাগই চালান স্বেচ্ছাসেবীরা। কোনও কোনও নম্বরে প্রতি দিন ২৪ ঘণ্টাই ফোনের অন্য প্রান্তে কেউ না কেউ অপেক্ষায় থাকেন। কোনও কোনও নম্বরে শুধুমাত্র দিনের নির্দিষ্ট সময়েই সাহায্য চেয়ে পাওয়া যায়। সাহায্য চাইলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফোন করে বিফল হতে হয় না।
কলকাতার এমন এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তপন রায়। তিনি জানালেন, নিয়মিতই ফোন আসে তাঁদের কাছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা যতটা পারি সাহায্য করি। কেউ মন খারাপ নিয়ে কথা বলতে চাইলে, অসহায় বোধ করলে আমরা সাধ্যমতো তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করি। তিনি যে একা নন, পাশে আমরাও আছি, সেই বার্তাটা পৌঁছে দিতে চাই।’’
কিন্তু শুধু তো কলকাতা বা রাজ্য নয়, নেটদুনিয়ায় এমন নম্বরের খোঁজ করলে ভিন রাজ্য বা অন্য শহরের বহু স্বেচ্ছাসেবীর নম্বরও হাতে আসে। তাঁদের কাছেও কি অন্য রাজ্য থেকে, অন্য ভাষায় কথা বলা মানুষের ফোন যায়? মুম্বইয়ের এমন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি জানালেন, অবশ্যই যায়। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সেই স্বেচ্ছাসেবীর কথায়, ‘‘অতিমারির পরে অবশ্যই এই ধরনের ফোনের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। আতঙ্ক, উদ্বেগ বেড়েছে। এমন ফোন তো আসতেই থাকে। ভাষাটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় না। আমরাও সাহায্য করব বলেই অপেক্ষা করি।’’ এ সবের মাঝেই তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ভুয়ো ফোনও যে আসে না, তা নয়। অনেকেই মজা করতে ফোন করেন। তাঁদের কাছে অনুরোধ, এমনটি করবেন না। যে সময় আপনারা আমাদের ফোন ব্যস্ত রাখছেন, সেই সময়ে হয়তো অন্য একটা মানুষ সাহায্যের খোঁজে নম্বর ডায়াল করে না পেয়ে আরও অসহায় হয়ে পড়ছেন।’’