উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চলছে। ছবি: পিটিআই।
উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করতে ইঁদুরের কায়দায় খোঁড়া হচ্ছে গর্ত। আর তাতেই তরতরিয়ে এগোচ্ছে কাজ। উদ্ধারকারীরা শ্রমিকদের সঙ্গে দূরত্বের ব্যবধান অনেকটাই কমিয়ে এনেছেন। আর মাত্র তিন মিটার দূরেই রয়েছে সাফল্যের হাতছানি।
কী ভাবে সুড়ঙ্গে ধ্বংসস্তূপ খোঁড়া হচ্ছে? ‘ইঁদুরের গর্ত’ খোড়ার প্রথম ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে এসেছে মঙ্গলবার। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, চার জন শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন একটি পাইপের ভিতর থেকে বেরিয়ে থাকা দড়ি টানছেন। সর্বশক্তি দিয়ে দড়িটি টানতে দেখা গিয়েছে শ্রমিকদের। আর চতুর্থ জনকে দেখা গিয়েছে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে।
সামনের দিক থেকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে মাত্র ১০-১২ মিটার বাকি ছিল। সেই অবস্থায় গত শুক্রবার থমকে যায় উদ্ধারকাজ। খননযন্ত্রটি ধ্বংসস্তূপের ভিতরে লোহার কাঠামোয় ধাক্কা খেয়ে ভেঙে যায়। তার টুকরোগুলি সব বার করার পর সোমবার থেকে আবার সেখানে খননকাজ শুরু হয়েছে। তবে এ বার আর যন্ত্র নয়, হাত দিয়ে খোঁড়া হচ্ছে। প্রয়োগ করা হচ্ছে ‘ইঁদুর গর্ত কৌশল’। এই পদ্ধতি কয়লা খনি থেকে কয়লা তোলার সময় কাজে লাগানো হয়।
মঙ্গলবার সকালে সুড়ঙ্গের ৫১.৫ মিটার খোঁড়া হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ক্ষুদ্র সুড়ঙ্গ বিশেষজ্ঞ ক্রিস কুপার। তিনি বলেন, ‘‘গত রাতে খুব ভাল কাজ হয়েছে। আমরা ৫০ মিটার পেরিয়ে গিয়েছি। আর পাঁচ থেকে ছ’মিটার বাকি। গত রাতে কাজে কোনও বাধা আসেনি। তাই আমরা আশাবাদী, দ্রুত পুরো অংশ খুঁড়ে ফেলতে পারব।’’ তার পর জানা যায় তিন মিটারের ব্যবধানে পৌঁছে গিয়েছেন উদ্ধারকারী।
গত ১৬ দিন ধরে উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে আছেন ৪১ জন শ্রমিক। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁদের উদ্ধার করা যায়নি। শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। পাইপের মাধ্যমে তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাবার, জল এবং অন্যান্য দরকারি জিনিসপত্র। দ্রুত ঘরে ফেরার আশায় দিন গুনছেন আটকে পড়া শ্রমিকেরা।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী জানিয়েছেন, শীঘ্রই সুখবর মিলতে পারে। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সকল ইঞ্জিনিয়ার, কর্মীরা সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছেন। পাইপ প্রায় ৫২ মিটার পর্যন্ত চলে গিয়েছে। যে ভাবে কাজ এগোচ্ছে, তাতে শীঘ্রই সুখবর মিলতে পারে।’’