Supreme Court Collegium

সংসদে পাশ করানো আইন বাতিল কেন? কলেজিয়াম বিতর্কে প্রধান বিচারপতির সামনে প্রশ্ন ধনখড়ের

এখন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণতম পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে তৈরি কলেজিয়াম বিচারপতিদের নিয়োগের সুপারিশ করে। কিন্তু মোদী সরকার ক্ষমতায় এসে জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) আইন এনেছিল।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:০৫
বিচারপতি নিয়োগ বিতর্কে এ বার উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়।

বিচারপতি নিয়োগ বিতর্কে এ বার উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র।

কলেজিয়াম পদ্ধতিতে বিচারপতি নিয়োগ ঘিরে সুপ্রিম কোর্ট এবং কেন্দ্রের টানাপড়েনে এ বার চলে এলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। তাঁর প্রশ্ন, সংসদে পাশের পরেই জাতীয় বিচারপতি নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) আইনকে সুপ্রিম কোর্ট ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে। তখনই কেন প্রশ্ন তুলল না আইনসভা?

দিল্লিতে একটি স্মারক বক্তৃতা কর্মসূচিতে ধনখড়ের বক্তৃতার সময় মঞ্চে হাজির ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। তাঁর উপস্থিতিতেই উপরাষ্ট্রপতির মন্তব্য, ‘‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত আইনসভার সদস্যদের পাশ করা আইনকে দেশের শীর্ষ আদালত ‘অসাংবিধানিক’ বলছে, এমন নজির বিশ্বে আর নেই!’’

Advertisement

এর পরেই ধনখড়ের মন্তব্য, ‘‘অথচ আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, সংসদ জনগণের ইচ্ছাকেই প্রতিফলিত করে। কোথাও বলা হয়নি, সংসদের পাশ করা কোনও আইন বাতিল করা যেতে পারে।’’

প্রসঙ্গত, কলেজিয়াম পদ্ধতিতে বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক চলছে বহু দিন ধরেই। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ শীর্ষস্থানীয় বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত ওই কলেজিয়ামই সম্ভাব্য বিচারপতিদের নাম সুপারিশ করে। তার পরে সেই নামগুলি বিবেচনা করে সরকার। কলেজিয়ামের পুনর্বিবেচনার জন্য সরকার নাম ফেরত পাঠাতে পারে। কিন্তু কলেজিয়াম সেই নামগুলি ফেরত পাঠালে সরকার তা মানতে বাধ্য।

২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্ট ও বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্টগুলির বিচারপতিদের নিয়োগে দীর্ঘ দুই দশকের কলেজিয়াম ব্যবস্থাকে পাল্টে দিয়েছিল। বিকল্প হিসাবে জাতীয় বিচারবিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (এনজেএসি) গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। এই উদ্দেশে সংসদ ও ১৬টি রাজ্যের বিধানসভায় বিলও পাশ করানো হয়।

কিন্তু কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একটি আর্জি দাখিল হওয়ায় বিষয়টি নয়া মোড় নেয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তু প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, যত ক্ষণ না কমিশনের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ তাঁদের সিদ্ধান্ত শোনাচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর পক্ষে নিয়োগ কমিশনের বৈঠকে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরে ২০১৫ সালের অক্টোবরে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এনজেএসি গড়ার ব্যবস্থাকে একেবারে বাতিল ঘোষণা করে কলেজিয়াম প্রথাই বহাল রাখার রায় দেয়।

মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু সম্প্রতি ধারাবাহিক ভাবে কলেজিয়াম পদ্ধতির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। পাশাপাশি তাঁর দাবি, কলেজিয়ামের মধ্যে যে নিয়োগ হচ্ছে, তাতে সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধিত্ব থাকছে না। তা ছাড়া কেন্দ্রের পক্ষের যুক্তি, দেশের শীর্ষ আদালত এবং উচ্চ আদালতগুলিতে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারেরই প্রধান ভূমিকা নেওয়া উচিত। অন্য দিকে, বিচার বিভাগের বড় অংশের অভিযোগ, প্রস্তাব পাঠানো হলেও নানা কারণে বিচারপতি নিয়োগের প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করছে মোদী সরকার। ফলে আদালতে তৈরি হচ্ছে শূন্যপদ, দীর্ঘায়িত হচ্ছে বিচারপ্রক্রিয়া।

আরও পড়ুন
Advertisement