Recruitment Scam

কোন কোন বিষয়ে পরীক্ষা দিলেন, বলতেই পারলেন না মধ্যপ্রদেশে সরকারি চাকরির তৃতীয় স্থানাধিকারী!

মধ্যপ্রদেশে পাটোয়ারি নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। প্রথম দশ জনের মধ্যে সাত জনই একটি নির্দিষ্ট কোচিং সেন্টারের পড়ুয়া। যার মালিক বিজেপি বিধায়ক।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
ভোপাল শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৩ ০৯:৪০
Image of Poonam Rajawat

মধ্যপ্রদেশে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানাধিকারী পুনম। ছবি: সংগৃহীত।

সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল, কোন কোন বিষয়ে পরীক্ষা দিলেন? হতভম্ব মুখে প্রশ্নকর্তার মুখের দিকে চেয়ে রইলেন চাকরির পরীক্ষায় তৃতীয় স্থানাধিকারী। উত্তর দিতে পারলেন না। মধ্যপ্রদেশে সরকারি চাকরির পরীক্ষা ঘিরে এখন তোলপাড় চলছে। অভিযোগ, ব্যাপক দুর্নীতির। যাতে জড়িয়ে গিয়েছে শাসকদল বিজেপির নাম।

গত ২৬ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশে রাজস্ব দফতরের কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা হয়। চলতি পরিভাষায় পাটোয়ারি পদে চাকরির পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় মে, জুন মাসে। এ জন্য রাজ্য জুড়ে মোট ৯.৮ লক্ষ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষায় বসেছিলেন। শূন্যপদের সংখ্যা ছিল ৯ হাজার। কিন্তু দেখা যায়, পরীক্ষায় প্রথম দশের মধ্যে সাত জনই একটি নির্দিষ্ট কোচিং সেন্টারের পড়ুয়া। যে কলেজের মালিক আবার বিজেপি বিধায়ক।

Advertisement

পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছেন পুনম রাজাওয়াত। তিনিও বিজেপি বিধায়কের কোচিং সেন্টারেরই ছাত্রী। সাংবাদিক তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, কোন কোন বিষয়ের পরীক্ষা তিনি দিয়েছেন? সেই আটটি বিষয়ের নামও পুনম বলতে পারেননি সাংবাদিককে। যদিও তাঁর দাবি, পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ তিনি শুনেছেন। সেই থেকে তিনি হতাশায় ভুগছেন। পুনম বলেন, ‘‘আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করেছি। কিন্তু মানুষ তা-ও অভিযোগ করছেন, শুনছি অনেক নাকি দুর্নীতি হয়েছে।’’

পুনমের বাবা নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। মা ক্যানসারের রোগী। তিন ভাইবোনের মধ্যে বড় পুনম। তিনি দাবি করছেন, প্রথমে শুধুমাত্র অনলাইন কোচিং নিয়েছিলেন। পরীক্ষার আগে অবশ্য একটি অফলাইন কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। বিজেপি বিধায়কের কোচিং সেন্টারের কথাই বলছেন কিনা তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি পুনম।

পুনমের পরীক্ষার খাতাটি ইদানীং সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তা নিয়েও পুনমকে প্রশ্ন করা হয়। ওই খাতায় দেখা যাচ্ছে, কঠিন প্রশ্নের উত্তর খুব ভাল লিখেছেন পুনম। কিন্তু সহজ প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারেননি। এটা কী করে সম্ভব? উত্তর দেননি পুনম।

অভিযোগ উঠছে, বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরির পদ বিক্রি করা হয়েছে। এবং গোটা প্রক্রিয়াটি চলেছে রাজ্যের শাসকদলের নেতাদের তত্ত্বাবধানেই। যদিও বিজেপি সমস্ত ধরনের অভিযোগই অস্বীকার করেছে। আগামিদিনে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশ সরগরম থাকবে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে সাড়া পড়ে গিয়েছে। দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই জেলে গিয়েছেন শাসকদলের একাধিক নেতা, মন্ত্রী। চাকরি বাতিলও হয়েছে অনেকের। এ বার ভোটের মুখে কার্যত একই অভিযোগে বিদ্ধ মধ্যপ্রদেশের বিজেপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement