Mahua Moitra

‘ঘুষের বদলে প্রশ্ন’, তাঁর সাংসদপদ খারিজ হলে কী করবে তৃণমূল, মহুয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে চর্চা তুঙ্গে

মহুয়ার এই লড়াইয়ে তৃণমূল পাশে থাক আর না থাক, কংগ্রেস পুরোদস্তুর রয়েছে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দলে নির্দেশ রয়েছে, মহুয়ার জন্য যেখানে যেমন প্রয়োজন হয়, লড়ে যেতে।

Advertisement
অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:২৩
mahua moitra

মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।

মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধ ওঠা ‘ঘুষের বদলে প্রশ্ন’ অভিযোগ যে মোড় নিচ্ছে, তাতে রাজনৈতিক শিবিরের একটা বড় অংশ মনে করছেন, তাঁর সাংসদপদ খারিজ হওয়াটা সময়ের অপেক্ষামাত্র। এ ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েই রেখেছে, এখন তাকে বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলে যে প্রশ্নটি এখন উঠে আসছে, তা হল, কৃষ্ণনগরের এই সাংসদের ভবিষ্যৎ কী? এখনও পর্যন্ত এই বিষয়টি নিয়ে মোটের উপর মৌন থাকা তৃণমূল কংগ্রেস কি অভিযোগ প্রমাণিত হলে বা স্পিকার তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করলে ফের ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মহুয়াকে টিকিট দেবে? নাকি মহুয়া কংগ্রেস বা বিজেডির মতো কোনও দলের হাত ধরবেন?

Advertisement

রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, মহুয়ার এই লড়াইয়ে তৃণমূল পাশে থাক আর না থাক, কংগ্রেস পুরোদস্তুর রয়েছে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দলে নির্দেশ রয়েছে, মহুয়ার জন্য যেখানে যেমন প্রয়োজন হয়, লড়ে যেতে। কৃষ্ণনগরের সাংসদের আদানি-বিরোধিতা এবং আদানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য ও নথি সংগ্রহের দিকটি সুবিধা করে দিয়েছে কংগ্রেসকেও। আপাতত রাহুল গান্ধীও আদানিকে পাখির চোখের মতো নিশানা করে রয়েছেন। সূত্রের খবর, আসন সমঝোতার সময় এই বিশেষ অনুরোধও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তৃণমূলের কাছে যেতে পারে যে, মহুয়াকে যেন টিকিট দেওয়া হয়। তাঁকে চব্বিশের লোকসভার লড়াইয়ে খুবই প্রয়োজন।

কংগ্রেস অবশ্য বাইরে জানাচ্ছে, মহুয়ার পরিস্থিতি শেষ পর্যন্ত কোথায় দাঁড়ায়, তা নজর করছে দল। সেই অনুযায়ী এগোনো হবে। আদানির বিরুদ্ধে যে লড়াই তিনি করছেন, তা কংগ্রেসের জন্য সুবিধাজনক। এখন আদানির বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করছেন বলে মহুয়াকে ফাঁসানো হচ্ছে কিনা, সেটাও দেখা হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা সৈয়দ নাসির হুসেন বলেছেন ‘‘আমাদের সাংসদেরা আজ বৈঠকে ছিলেন। সেখানে কী হয়েছে, আমরা তার রিপোর্ট নেব। তার পরে ওই বিষয়ে অবস্থান নেব। কমিটি কী রিপোর্ট দিচ্ছে, সেটাও দেখতে হবে।’’

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মহুয়া মৈত্রকে গত কয়েক দিন ধরে বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, তিনিও তৃণমূল শীর্ষ নেতত্বকে এই বার্তা দিতে চাইছেন যে, এই লড়াই তিনি তাঁর একার জন্য লড়ছেন না। চব্বিশে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়ে মোদীকে হারানোটাই তাঁর উদ্দেশ্য। মমতাকে নিজের ‘দ্বিতীয় জননী’ বলেও উল্লেখ করেছেন মহুয়া। এক শীর্ষ নেতার কথায়, “দিদি বলেই আপামর পরিচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ভাই এবং বোন অনেক থাকলেও কন্যা
কিন্তু নেই। সেই জায়গাটি মহুয়া নিতেই পারেন।”

এটা ঘটনা যে, লড়াকু নেতা বলে পরিচিত মহুয়া হাল না ছেড়ে যে ভাবে লড়ছেন, তা অনেকেরই আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে। তিনি সংবাদমাধ্যমের অকাতর প্রচারও পাচ্ছেন মোদীর বিরুদ্ধে একটি জোরালো মুখ হিসাবে। মহুয়াকে যদি সাংসদ পদ থেকে বিতাড়িত করা হয়, তা হলে এর সঙ্গে শহিদের মর্যাদাও যুক্ত হবে। ফলে কৃষ্ণনগর থেকে মহুয়াকে টিকিট দেওয়া হলে তাঁর জেতার সম্ভাবনা যথেষ্টই।

আরও পড়ুন
Advertisement