Supreme Court on ED

‘আদালতের সম্মতি ছাড়া অর্থ নয়ছয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার নয়’, সুপ্রিম কোর্ট রাশ টানল ইডির ক্ষমতায়

সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার বলেছে, ‘‘যদি এক জন অভিযুক্ত সমনে সাড়া দিয়ে আদালতে হাজির হন, তবে তাঁকে গ্রেফতার করতে হলে ইডিকে সংশ্লিষ্ট আদালতেই আবেদন করতে হবে।’’

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৪ ১৩:১৭
Supreme Court says, ED can’t arrest accused after special court has taken cognisance of complaint

লোকসভা ভোটপর্বের মাঝেই কেন্দ্রীয় এজেন্সি ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ (ইডি)-এর ক্ষমতায় রাশ টানল সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা ভোটপর্বের মাঝেই কেন্দ্রীয় এজেন্সি ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ (ইডি)-এর ক্ষমতায় রাশ টানল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, বিশেষ আদালতে বিচারাধীন ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন’ (পিএমএলএ) মামলার ১৯ নম্বর ধারায় (অর্থ নয়ছয়) অভিযুক্তকে ইডি গ্রেফতার করতে পারবে না। ইডি যদি তেমন কোনও অভিযুক্তকে হেফাজতে রাখতে চায়, তা হলে সংশ্লিষ্ট বিশেষ আদালতে আবেদন করতে হবে।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ বৃহস্পতিবার নির্দেশ ঘোষণা করে বলেছে, ‘‘যদি এক জন অভিযুক্ত সমনে সাড়া দিয়ে আদালতে হাজির হন, তবে তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য ইডিকে সংশ্লিষ্ট আদালতেই আবেদন করতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া হাজিরা দেওয়া অভিযুক্তকে হেফাজতে নিতে পারবে না ইডি।’’ সেই সঙ্গে দুই বিচারপতির বেঞ্চের তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ— ‘‘পিএমএলএ মামলায় অভিযুক্ত যদি সমন মেনে আদালতে হাজিরা দেন, তবে তাঁর আলাদা ভাবে জামিনের আবেদন করার কোনও প্রয়োজন নেই।’’

এ ক্ষেত্রে পিএমএলএ-র ৪৫ নম্বর ধারার জোড়া শর্ত কার্যকরী হবে না বলেও বৃহস্পতিবার জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রসঙ্গত, ওই জোড়া শর্তের প্রথমটি জানাচ্ছে, যখন পিএমএলএ মামলার অভিযুক্ত জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করবেন, তখন প্রথমে শুনানির জন্য সরকারি আইনজীবীর সম্মতি প্রয়োজন। সরকারি আইনজীবী যদি সন্তুষ্ট হন যে, অভিযুক্ত দোষী না-ও হতে পারেন এবং মুক্তি পেলে অনুরূপ অপরাধ করার সম্ভাবনা নেই, কেবলমাত্র তখনই জামিন দেওয়া যেতে পারে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের জেরে গুরুত্বহীন হয়ে গেল ইডির সেই অতিরিক্ত ক্ষমতা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে কার্যকরী হওয়া সংশোধিত পিএমএলএ আইনে গ্রেফতারি, তল্লাশি, সমন পাঠানো বা নগদ সম্পত্তি আটকের ক্ষেত্রে ইডির হাতে যথেচ্ছ ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন এবং বিরোধীদের অভিযোগ। ইডির এই ক্ষমতা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের বিরোধী বলেও অভিযোগ উঠেছিল। ইডি তদন্ত শুরুর আগে যে ইসিআইআর (এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফরমেশন রিপোর্ট) দায়ের করে, তা গ্রেফতারির আগে দেখানো-সহ বিভিন্ন দাবিতে শতাধিক মামলা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। কিন্তু ২০২২ সালের ২৭ জুলাই অবসর নেওয়ার দু’দিন আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি খানউলকর তাঁর রায়ে জানিয়েছিলেন, ইসিআইআর দেখানোর প্রয়োজন নেই। তা ইডির নিজস্ব নথি।

তবে ইডির অধিকাংশ ‘বাড়তি ক্ষমতায়’ সিলমোহর দিলেও পরবর্তী সময়ে দু’টি ক্ষেত্রে ফের ভাবনাচিন্তা করতে রাজি হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ওই বছরের অগস্টে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এনভি রমণার বেঞ্চ জানিয়েছিল, দু’টি ক্ষেত্রে ইডির বাড়তি ক্ষমতা পুনর্বিবেচনা করা হবে। প্রথমত, গ্রেফতারির আগে ইডি যে ইসিআইআর দায়ের করে, সেটি দেখাতে তারা বাধ্য নয় বলে ঘোষিত রায়। দ্বিতীয়ত, পিএমএলএ-তে অভিযুক্তের উপরেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের যে দায় বর্তায়, সেই বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করা হবে। সেই মামলা এখন শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন। তারই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট ছেঁটে দিল গ্রেফতারি নিয়ে ইডির বাড়তি ক্ষমতা।

আরও পড়ুন
Advertisement