সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে কোনও ভুল ছিল না। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
পুরনো ১০০০ টাকা এবং ৫০০ টাকার নোট বাতিল করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে যে মামলাগুলি হয়েছিল, সোমবার তার রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে বলা হয়েছে, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে কোনও ভুল ছিল না। আর সেই জন্য কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকেই সমর্থন জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক কোনও সিদ্ধান্তকে পাল্টে দেওয়া যায় না। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, কী ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা বিবেচনা করে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে পাল্টানো যায় না। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে ছ’মাস ধরে আলোচনা করেই কেন্দ্র নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। রায় ঘোষণার সময় এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দেন চার বিচারপতি, বিরুদ্ধে মত দেন এক জন।
নোটবন্দির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ৫৮টি পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। আবেদনকারীদের যুক্তি, সরকার সঠিক পরিকল্পনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত। সরকারের পাল্টা যুক্তি ছিল, বাস্তবে এই সিদ্ধান্তকে বাতিল করা সম্ভব নয়। নোটবন্দির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হলে ‘সময়ের পিছনে গিয়ে’ বাতিল করতে হবে বলেও দাবি করেন কেন্দ্রের আইনজীবী।
Supreme Court upholds the decision of the Central government taken in 2016 to demonetise the currency notes of Rs 500 and Rs 1000 denominations. pic.twitter.com/sWT70PoxZX
— ANI (@ANI) January 2, 2023
বিচারপতি এসএ নাজিরের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ শীতকালীন বিরতির আগে বাদী-বিবাদী পক্ষের যুক্তি শুনেছিল এবং ৭ ডিসেম্বর রায়দান স্থগিত রেখেছিল। সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি বিআর গাভাই, বিভি নাগারথনা, এএস বোপান্না এবং ভি রামাসুব্রহ্মণ্যম। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি বিভি নাগারথনা এই মামলায় দু’টি পৃথক রায় দিয়েছিলেন বলেও জল্পনা উঠেছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করে নতুন ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, কালো টাকার রমরমা রুখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের তরফে এ-ও দাবি করা হয়েছিল, পুরনো নোট বদল করলে কালো টাকা রাখা ব্যক্তিরা এক দিকে যেমন বিপদে পড়বে, তেমনই ভারতীয় অর্থনীতিতে স্বচ্ছতা আসবে। কিন্তু নোটবন্দি হতেই সম্পূর্ণ অন্য এক চিত্র ধরা পড়ে। দেশ জুড়ে সমস্যার মুখে পড়েন সাধারণ মানুষ। ব্যাঙ্কের বাইরে নতুন টাকা পেতে ভিড় জমাতে শুরু করে মানুষ। টাকা বদলানোর ভিড়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুও দেখেছিল দেশবাসী। পরে দেখা যায়, যত টাকা খোলাবাজারে ছিল, তার প্রায় পুরোটাই ফিরে এসেছে ব্যাঙ্কে।