রাজ্যপালের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দিচ্ছেন একনাথ শিন্ডে (সাদা পোশাক)। শিন্ডের বাঁ দিকে দেবেন্দ্র ফডণবীস এবং ডান দিকে অজিত পওয়ার। ছবি: পিটিআই।
মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন একনাথ শিন্ডে। তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ না-নেওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী ভাবে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। পাকাপাকি ভাবে ফের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি তিনি ফিরে পাবেন কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে তাঁর দলের নেতা এবং কর্মী-সমর্থকেরা শিন্ডেকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তুলেছেন।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কী পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বিজেপি পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়ে এগোতে চাইছে। সে ক্ষেত্রে প্রথমে সম্ভাব্য মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। শরিক দলগুলির মধ্যে দফতর বণ্টন করার পর পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়া হবে।
সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ দিল্লি যান বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস। বিজেপির একটি সূত্র মারফত দাবি করা হয়, সরকার গঠনের বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতেই মুম্বই থেকে দিল্লি উড়ে গিয়েছেন ফডণবীস। শোনা গিয়েছিল, অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। ফডণবীস নিজে অবশ্য দাবি করেন, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার মেয়ের বিয়েতে যোগ দিতেই তিনি দিল্লি গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বৈঠক হওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও দাবি করেন মহারাষ্ট্রের বিদায়ী মন্ত্রিসভার উপমুখ্যমন্ত্রী।
তবে তাতে জল্পনা থামছে না। সোমবারই ‘বিহার মডেলের’ প্রসঙ্গ টেনে শিন্ডেসেনার মুখপাত্র নরেশ মাশকে বলেন, ‘‘বিহারে যেমন বিজেপি আসনসংখ্যার দিকে না-তাকিয়ে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল, তেমনই এখানেও শিন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত।’’
শিন্ডেসেনার বিধায়ক এবং কর্মী-সমর্থকেরা শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি জানালেও মহারাষ্ট্রের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী নিজে অবশ্য সকলকে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন।
সোমবার গভীর রাতে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন শিন্ডে। সেখানে তিনি কর্মীদের সংযত থাকার অনুরোধ করেন এবং বর্ষা ভবনের (মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন) সামনে জড়ো না-হওয়ার আর্জি জানান। তিনি লেখেন, ‘‘আমি আপনাদের ভালবাসায় অভিভূত। কিন্তু আরও এক বার আপনাদের বিনীত অনুরোধ করছি, শিবসেনা কর্মীরা বর্ষা নিবাস বা অন্য কোথাও জমায়েত করবেন না।’’ শাসক জোট ‘মহাজুটি’ মহারাষ্ট্রের আরও উন্নতি এবং সমৃদ্ধি ঘটাবে বলেও জানান তিনি।
বিজেপির একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত ফডণবীসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করা না-হলে জোটে কী প্রভাব পড়তে পারে, তাই নিয়েও নাকি আলোচনা হয়। ভিতরে তাপ-উত্তাপ বৃদ্ধি পেলেও প্রকাশ্যে অন্তত দুই দলই এককাট্টা থাকার বার্তা দিচ্ছে। আর জোটের তৃতীয় বৃহত্তম শরিক অজিত পওয়ারের এনসিপি আগেই ফডণবীস মুখ্যমন্ত্রী হলে সমর্থন দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে।