Baba Siddique murder

পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ২৯ দিন! বাবা সিদ্দিকিকে খুনের পর কী কী করলেন শিবকুমার? জানাল পুলিশ

১২ অক্টোবর বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে খুন করা হয়। তাঁর অন্যতম শুটার ছিলেন শিবকুমার। রবিবার তাঁকে উত্তরপ্রদেশের বহরাইচ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৯ দিন পালিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৩১
(বাঁ দিকে) লরেন্স বিশ্নোইয়ের ভাই আনমোল বিশ্নোই। বাবা সিদ্দিকি খুনে অন্যতম অভিযুক্ত ধৃত শিবকুমার (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) লরেন্স বিশ্নোইয়ের ভাই আনমোল বিশ্নোই। বাবা সিদ্দিকি খুনে অন্যতম অভিযুক্ত ধৃত শিবকুমার (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকির খুনের ঘটনায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত শিবকুমারকে রবিবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মূল ঘটনার পর ২৯ দিন ধরে পুলিশের চোখ এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল মুম্বইয়ের গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইয়ের ভাই আনমোল বিশ্নোইয়ের। তাঁকে নেপালে পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই ধরা পড়ে যান শিবকুমার।

Advertisement

গত ১২ অক্টোবর দশেরার উৎসব চলাকালীন বান্দ্রায় গুলি করে খুন করা হয়েছিল সিদ্দিকিকে। তাঁকে গুলি করার জন্য তিন জন আততায়ী এসেছিল ঘটনাস্থলে। তাদের মধ্যে দু’জনকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশ। কিন্তু শিবকুমার পালিয়ে গিয়েছিলেন। তার পর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, সিদ্দিকিকে খুনের সময়ে প্রাণঘাতী গুলিটি করেছিলেন এই শিবকুমারই। উত্তরপ্রদেশের বহরাইচ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুম্বই পুলিশের সঙ্গে এ ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশও।

শিবকুমারের সঙ্গে রবিবার আরও চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁরা সকলেই এই অভিযুক্তকে পালাতে সাহায্য করছিলেন বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে সিদ্দিকিকে খুনের মূল চক্রান্তের সঙ্গেও কোনও না কোনও ভাবে তাঁরা জড়িত ছিলেন। উত্তরপ্রদেশের এসটিএফের ডেপুটি এসপি প্রমেশ শুক্ল বলেন, ‘‘আনমোল বিশ্নোইয়ের সঙ্গে শিবকুমারের যোগাযোগ ছিল। স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমে প্রায়ই তাঁদের কথা হত। খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য শিবকুমার এবং তাঁর সহযোগীদের দেওয়া হয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, একাধিক সিম কার্ড এবং মোবাইল ফোন। শুভম লোঙ্কার এবং মহম্মদ ইয়াসিন আখতার তাঁদের এই জিনিসগুলি দিয়েছিলেন।’’ উল্লেখ্য, সিদ্দিকি খুনের চক্রান্তের নেপথ্যে অন্যতম মূল ব্যক্তি শুভম, দাবি পুলিশের। এখনও তিনি ফেরার। তাঁর খোঁজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, সিদ্দিকিকে খুনের আগে শিবকুমারেরা দিনের পর দিন মুম্বইয়ে ‘মহড়া’ দিয়েছেন। ১২ অক্টোবরের রাতটিকে তাঁরা বেছে নিয়েছিলেন, কারণ তাঁরা ভেবেছিলেন, উৎসবের রাতে খুন করে পালানো তুলনামূলক সহজ হবে। কিন্তু দুই আততায়ীকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করে ফেলে পুলিশ। কোনও রকমে সেখান থেকে পালাতে পেরেছিলেন শিবকুমার। অন্য দুই আততায়ী ছিলেন ধমররাজ কাশ্যম এবং গুরমেল সিংহ।

ঘটনাস্থল থেকে পালানোর পর শিবকুমার মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলেন। তার পর সোজা চলে যান পুণে। সেখান থেকে ঝাঁসি হয়ে লখনউ যান। তার পর বহরাইচে গিয়ে গা-ঢাকা দেন। সেখান থেকেই নেপালে পালানোর পরিকল্পনা ছিল তাঁর। পুলিশের দাবি, এই ২৯ দিন আনমোলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন শিবকুমার। তাঁর নির্দেশেই বিভিন্ন জায়গায় গা-ঢাকা দিয়েছিলেন। ধৃত ধরমরাজের দাদা অনুরাগ কাশ্যপও এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। তাঁকে রবিবার শিবকুমারের সঙ্গেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সিদ্দিকি খুনের ঘটনায় এই নিয়ে ২৩ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এখনও শুভম লোঙ্কার এবং জ়িশান আখতারের খোঁজ চলছে। জ়িশানও অন্যতম মূল চক্রী। তদন্তকারীদের দাবি, তিনি শুটারদের জন্য টাকা পাঠিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন
Advertisement