Telangana Assembly Election Result 2023

তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের ‘নাটু নাটু’র নেপথ্যে ‘আরআর’, একদা আরএসএস, পরে টিডিপি, এ বার মুখ্যমন্ত্রী?

ছাত্রজীবনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ছাত্রশাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ করতেন রেবন্ত। সেই সময় থেকেই তাঁর বেড়ে ওঠার এলাকা কোদাঙ্গলে তিনি বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৪
Telangana Assembly Election Result 2023

( বাঁ দিক থেকে) রাহুল গান্ধী, রেবন্ত রেড্ডি, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। —পিটিআই।

রবিবার পড়ন্ত বিকেল। ফুলস্লিভ জামার হাতাটা গুটিয়ে তিনি এসে বসলেন সাংবাদিক সম্মেলনে। তেলঙ্গানার ফলাফল তত ক্ষণে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। হায়দরাবাদে প্রদেশ কংগ্রেস দফতরের সামনে ডিজে বাজিয়ে তুমুল উৎসব চলছে। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন, আপনিই কি মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন? তিনি জবাব দিলেন, ‘‘আপনি নতুন মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নেবেন তো? আমি আপনাকে বন্দোবস্ত করে দেব। আমিই তো প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। চিন্তা করবেন না!’’

Advertisement

৫৪ বছর বয়সি সুঠাম চেহারার নাম আনুমুলা রেবন্ত রেড্ডি। যদিও তেলঙ্গনার রাজনীতি তাঁকে ‘রেবন্ত রেড্ডি’ নামেই চেনে। সে দিক থেকে নাম-পদবির আদ্যক্ষর পাশাপাশি রাখলে তিনিও ‘আরআর’। ২০২১ সালে এস এস রাজামৌলি পরিচালিত ‘আরআরআর’-এর একটি গান অস্কার জিতে এনেছিল— ‘নাটু নাটু’। যার অর্থ, ‘নাচো নাচো’। গোটা হিন্দি বলয়ে যখন কংগ্রেস কার্যত ধরাশায়ী, তখন তেলঙ্গানার কংগ্রেসে উৎসবের মেজাজ এনে দিলেন এই ‘দবং’ নেতা। বিআরএসকে সরিয়ে ক্ষমতায় এল কংগ্রেস। নাচলেন সমর্থকেরা। নেতৃত্বে ‘আরআর’।

ছাত্রজীবনে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ছাত্রশাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ করতেন রেবন্ত। সেই সময় থেকেই তাঁর বেড়ে ওঠার এলাকা কোদাঙ্গলে তিনি বিপুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশে ২০০৭ সালে বিধান পরিষদে উপনির্বাচন এসে পড়ে। নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ান রেবন্ত। জিতেও যান। তার পরে যোগ দেন তেলুগু দেশম পার্টিতে। ২০০৯ সালে আবার জেতেন টিডিপির হয়ে। ২০১৪ সালে পৃথক তেলঙ্গনা রাজ্য হওয়ার পরে তিনি টিডিপির বিধায়ক ছিলেন। ২০১৭ সালে রেবন্ত যোগ দেন কংগ্রেসে।

তবে রাজনৈতিক উত্থানের মধ্যেই ‘ঘুষের কালি’ও লেগেছিল রেবন্তের গায়ে। একটি গোপন ক্যামেরা অপারেশনে তাঁকে ঘুষ দিতে দেখা গিয়েছিল এক নির্দল বিধায়ককে। তার পর তাঁকে গ্রেফতার করে কে চন্দ্রশেখর রাও পুলিশের দুর্নীতিদমন শাখা। কয়েক মাস জেলে থাকার পর জামিন পেয়েছিলেন রেবন্ত। হতে পারে তারই বদলা নিলেন ২০২৩ সালে এসে। গদিচ্যুত করলেন কেসিআরকে।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে মালকাজগিরি আসন থেকে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়িয়ে সাংসদ হন রেবন্ত। ২০২১ সালে তাঁকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করে ১০ নম্বর জনপথ। সেই রেবন্তই ২০২৩-এ কংগ্রেসকে জয়ের স্বাদ দিলেন। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের মতো রেবন্তও দু’টি আসনে প্রার্থী ছিলেন। কেসিআরের সঙ্গে রেবন্তের মুখোমুখি লড়াই হয় কামারেড্ডি কেন্দ্রে। কেউই জেতেননি। দুই নেতার লড়াইয়ের মাঝে ভোটা কাটাকাটিতে বিজেপি জিতে যায় ওই আসনটি। তবে রেবন্ত জিতেছেন কোদাঙ্গলে।

কংগ্রেস তাঁকে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী করবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু আরআর-এর শরীরী ভাষায় আত্মবিশ্বাস স্পষ্ট। যে আত্মবিশ্বাস বলছে, তিনিই ‘নিয়ন্ত্রক’। তাঁর জন্যেই খেলা ঘুরেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement