রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উদ্যোগে করা জাতসমীক্ষা মানুষকে বোকা বানানো ছাড়া কিছু নয় বলে অভিযোগ করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। পাশাপাশি, গোটা দেশে জাতগণনার দাবি নিয়ে আজ ফের সরব হয়েছেন তিনি।
পটনার বাপু সভাঘরে ‘সংবিধান সুরক্ষা সম্মেলন’-এ যোগ দিয়ে রাহুল আজ দাবি করেছেন, দেশে উন্নয়নের পরিকল্পনা নিতে জাতসমীক্ষা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তাঁর যুক্তি, ‘‘দলিত, সংখ্যালঘু ও সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষেরা ভারতের মোট জনসংখ্যার নব্বই শতাংশ। অথচ তাঁরা উন্নয়নের শরিক নন। এই কারণেই জাতসমীক্ষার দাবি।’’ লোকসভার বিরোধী দলনেতার কথায়, ‘‘আমলাতন্ত্র এবং অন্য ক্ষেত্রগুলিতে দলিত, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব কতটা, তা দেখা খুবই জরুরি।... জাতসমীক্ষার উদ্দেশ্য শুধু সংখ্যাবিচার নয়, বরং দেশের সম্পদে তাদের অংশীদারি কতটা, তা জানা।’’
রাহুল এই প্রসঙ্গে বিহারের জাতসমীক্ষার কথা টেনে আনেন। বলেন, ‘‘বিহার যে ভাবে জাতসমীক্ষা করেছে, আমরা সেটা চাই না। বিহার সরকার এ ব্যাপারে যা পদক্ষেপ করেছে, তা মানুষকে বোকা বানানো ছাড়া কিছু নয়।’’ তফসিলি জাতি, জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা ‘যথেষ্ট নয়’ বলেও মতপ্রকাশ করেন রাহুল। দেশে জাতসমীক্ষা করানোর ব্যাপারে কংগ্রেসের স্পষ্ট অবস্থানকে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ সংসদের অন্য নেতাদের সামনে আমি নির্দিষ্ট ভাবে বলেছি, আমাদের দল জাতসমীক্ষার দাবিকে বাস্তবায়িত করে তুলবেই।’’ সেক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষের স্বার্থের কথা ভেবে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা তুলে নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। রাহুলের কথায়, ‘‘সংবিধান শুধু কোনও বই নয়, দলিতদের উপর অত্যাচার বন্ধ কিংবা তাদের সমস্যা মেটানোর কথাও বলা রয়েছে এতে।’’
রাহুল আজ শুরু থেকেই আরএসএসকে নিশানা করেন। ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তি নিয়ে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন, তা টেনে আনেন তিনি। বলেন, ‘‘রাম মন্দিরের উদ্বোধনে ভারত প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছে বলে উনি যে কথা বলেছেন, তা সংবিধান বিরোধী। বিজেপি ও আরএসএস সংবিধানের গুরুত্বকে লঘু করছে আর সমাজের প্রান্তিক মানুষদের অবহেলা করছে।’’ লোকসভার বিরোধী দলনেতার মতে, দেশে এখন রাজনৈতিক লড়াই দুই শিবিরের মধ্যে। এই দুই শিবির হল, যারা সংবিধানকে রক্ষা করতে চাইছে আর যারা ঘৃণা ছড়াতে চাইছে।