Pahalgam Terror Attack

জঙ্গি হামলার পরে কাশ্মীরে আটক এক সহিস, পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের তিনিই কি জিজ্ঞাসা করেন ধর্ম! তদন্তে পুলিশ

গান্দেরবাল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সহিসের নাম আইয়াজ় আহমেদ জুঙ্গাল। গান্দেরবালের গোহিপোড়া রাইজ়ানের বাসিন্দা তিনি। সোনমার্গের থাজওয়াস হিমবাহে পর্যটকদের খচ্চরের সওয়ারি করান।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ২২:৩১
পহেলগাঁওয়ে কড়া প্রহরা।

পহেলগাঁওয়ে কড়া প্রহরা। — ফাইল চিত্র।

পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরে একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (আনন্দবাজার ডট কম তার সত্যতা যাচাই করেনি)। সেখানে এক মহিলা পর্যটক দাবি করেছেন, পহেলগাঁওয়ে ঘোড়ার এক সহিস তাঁদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করেছিলেন। এর পরেই শুক্রবার এক সহিসকে আটক করেছে গান্দেরবাল পুলিশ। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে। মহিলা যে সহিসের বিরুদ্ধে ভিডিয়োতে অভিযোগ করেছেন, ধৃত ব্যক্তি তিনিই কি না, তা এখনও স্পষ্ট করে প্রকাশ করেনি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশ।

Advertisement

গান্দেরবাল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সহিসের নাম আইয়াজ় আহমেদ জুঙ্গাল। তাঁর বাবার নাম নবি জুঙ্গাল। গান্দেরবালের গোহিপোড়া রাইজ়ানের বাসিন্দা তিনি। সোনমার্গের থাজওয়াস হিমবাহে পর্যটকদের খচ্চরের সওয়ারি করান তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, এই আইয়াজ়ের সঙ্গে পহেলগাঁও হামলার কোনও যোগ রয়েছে কি না, মহিলা যে সহিসের কথা বলেছেন, ধৃত তিনিই কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ধৃত আইয়াজ় আহমেদ জুঙ্গাল।

ধৃত আইয়াজ় আহমেদ জুঙ্গাল। ছবি: সংগৃহীত।

পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে জড়িত তিন জনের স্কেচ প্রকাশ করেছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। সেই স্কেচ দেখার পরে একতা তিওয়ারি নামে এক মহিলা পর্যটক দাবি করেছেন, ওই তিন জনের মধ্যে এক জনের সঙ্গে গত ২০ এপ্রিল তাঁর দেখা হয়েছিল পহেলগাঁওয়ে। একতা উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর থেকে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ২০ জনের একটি দলের সঙ্গে। নিজের মোবাইলে মেরুন জ্যাকেট, পাজামা পরা এক ব্যক্তির ছবিও দেখান তিনি। একতার দাবি, ওই ব্যক্তিই পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে জড়িত। ওই ব্যক্তি তাঁকে ধর্ম নিয়েও জিজ্ঞাসা করেছিলেন বলে দাবি একতার। তিনি আরও জানিয়েছেন, বৈসরন উপত্যকাতেই ওই ব্যক্তির ছবি তুলেছেন তিনি। তবে তাঁর নাম জিজ্ঞাসা করতে ভুলে গিয়েছেন।

ভিডিয়োতে একতা আরও দাবি করেন, তাঁর বন্ধুরাও ওই ব্যক্তিকে চিনতে পেরেছেন। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলছেন না। একতা জানিয়েছেন, ওই সহিস তাঁকে তাঁর নাম এবং ধর্ম জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তিনি এ-ও জিজ্ঞাসা করেন যে, একতা কখনও অজমের শরিফ বা অমরনাথ গিয়েছেন কি না। তাঁর কত জন হিন্দু বা মুসলিম বন্ধু রয়েছেন। তিনি অমরনাথ যেতে চান কি না, তা-ও জিজ্ঞাসা করেছিলেন ওই সহিস। তাঁর অমরনাথ যাত্রার ব্যবস্থা করে দিতে পারেন বলেও দাবি করেছিলেন সহিস। একতা কোরান পড়েছেন কি না, সেই প্রশ্নও করেন তিনি। একতার দাবি, তিনি জবাবে জানিয়েছিলেন, উর্দু পড়তে পারেন না। তাই কোরান পড়া হয়নি। তখন সহিস জানিয়েছিলেন, হিন্দিতে লেখা কোরানও পাওয়া যায়। একতা জানিয়েছেন, এ সব প্রশ্নের পরে তিনি ভীত হয়ে পড়েছিলেন।

এর পরেই সহিসের কাছে একটি ফোন এসেছিল বলে জানিয়েছিলেন একতা। সেই ফোনে তাঁকে বলতে শুনেছিলেন, ‘‘প্ল্যান এ ব্রেক ফেল। প্ল্যান বি ৩৫ বন্দুক পাঠানো হয়েছে। উপত্যকার ঘাসে রয়েছে।’’ যখন সহিস বুঝতে পারেন একতা তাঁর কথা শুনছেন, তখন অন্য ভাষায় তিনি কথা বলতে শুরু করেন, এমনটাই জানিয়েছেন একতা। মহিলার আরও দাবি, কথা শুনে ওই সহিসকে পাকিস্তানি বলে মনে হয়েছিল তাঁর। প্রশ্ন উঠেছে, এ সব শোনার পরেও পুলিশকে জানাননি কেন তিনি? একতার দাবি, পর্যটকদের বুথে কোনও লোক ছিল না। পহেলগাঁওয়ের ৭-৮ কিলোমিটার আগে একটি চেকপোস্ট ছিল। তিনি যখন ফিরছিলেন, তখন সেই চেকপোস্টেও কেউ ছিলেন না। একতা বার বার দাবি করেছেন, পুলিশ যে তিন জনের স্কেচ প্রকাশ করেছেন, তাঁদের মধ্যে এক জনের সঙ্গেই তাঁর দেখা হয়েছিল পহেলগাঁওয়ে। একতার এই দাবি এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জেরা করছে ধৃতকে আইয়াজ়কে। তাঁর সঙ্গে হামলার যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement
আরও পড়ুন