বারাণসী গণধর্ষণকাণ্ডে উঠে এসেছে যৌনচক্রের তথ্য। প্রতীকী ছবি।
বারাণসী গণধর্ষণকাণ্ডের তদন্তে নেমে যৌনচক্রের হদিস পেল পুলিশ। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এটি নিছকই একটি গণধর্ষণের ঘটনা নয়, এই ঘটনার পিছনে বড়সড় যৌনচক্র রয়েছে। আর সেই যৌনচক্র বারাণসীর গণ্ডি ছাড়িয়ে বেশ কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়ে রয়েছে। গত ৪ এপ্রিল এই গণধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত-সহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এখনও বাকি ১১ অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই তরুণী একা নন, যৌনচক্রের শিকার হয়েছেন কয়েকশো কিশোরী, তরুণী এবং যুবতী। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, মূল অভিযুক্তের কাছ থেকে যে ফোন উদ্ধার হয়েছে, তাতে ৫৪৬ জন মহিলার অশ্লীল ভিডিয়ো এবং ছবি পাওয়া গিয়েছে। সেই ছবি এবং ভিডিয়ো বিভিন্ন রাজ্যে পাঠিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করা হত। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও মহারাষ্ট্র, দিল্লি, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং তামিলনাড়ুতে সেই ভিডিয়ো এবং ছবি পাঠানো হত।
পুলিশ জানিয়েছে, মূল অভিযুক্ত একটি ক্যাফের মালিক। সেই ব্যবসার আড়ালে যৌনচক্র চালাতেন বলে অভিযোগ। মীরপুর ভাসির বাসিন্দা মূল অভিযুক্ত। মূলত বেছে বেছে কমবয়সি ছেলেদের নিজের দলে নিয়োগ করতেন গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। তাঁর ফোন ঘেঁটে গ্রাহকদের তালিকা, ফোন নম্বর-সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের সকলের ফোন ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ জানতে পেরেছে, মূল অভিযুক্তের বাবাও এই যৌনচক্রের সঙ্গে জড়িত। ২০২২ সালেও বাবা-ছেলেকে একই রকম ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। দু’জনের জামিন বার বার খারিজ করে বারাণসী আদালত। কিন্তু হাই কোর্টে জামিন মঞ্জুর হয়। সিগরা থানা এলাকায় ২০১৮ সাল থেকে একটি ফাস্ট ফুডের দোকান চালাচ্ছিলেন মূল অভিযুক্ত। ২০২০ সালে সোনিয়া পোখারে এলাকায় একটি ছোট দোকান ভাড়া নিয়ে ক্যাফে খোলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই ক্যাফের ব্যবসার আড়ালে মাদক এবং নারী পাচারচক্র চালাতেন বলে অভিযোগ। তরুণী, যুবতী এবং কিশোরীদের ফাঁদে ফেলতেন। তাঁর পর তাঁদের মাদক খাইয়ে ধর্ষণ করতেন, এমনকি গ্রাহক দিয়ে ধর্ষণ করাতেন বলে অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, সেই ঘটনার ভিডিয়ো এবং ছবিও তুলে রাখতেন। তার পর সেগুলি বিক্রি করতেন।
গত ৪ এপ্রিল তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। সাত দিন ধরে আটকে রেখে ২৩ জন মিলে তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা বারাণসীতে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। গত বৃহস্পতিবারই নিজের সংসদীয় কেন্দ্র বারাণসীতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে পৌঁছেই গণধর্ষণকাণ্ড নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থার নির্দেশ দেন তিনি।