সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পাওয়া ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের দৃশ্য়। ছবি: সংগৃহীত।
ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল রোগীকে। বেডে শুয়েছিলেন মিনিট ১৫। চিকিৎসক কাছেপিঠেই ছিলেন। কিন্তু রোগিণীকে দেখার সময় হয়নি তাঁর। অভিযোগ, তিনি বসে বসে মোবাইলে ‘রিল’ দেখছিলেন। তার মধ্যে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ৬০ বছর বয়সি ওই রোগিণীর। ঘটনাস্থল উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরী জেলা হাসপাতাল। রোগী পরিবারের অভিযোগ, শুধুমাত্র চিকিৎসকের গাফিলতিতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রৌঢ়া। একই সঙ্গে রোগীর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ওই চিকিৎসকের বিরদ্ধে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে প্রবেশ কুমারী নামে এক রোগিণীকে মৈনপুরী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। স্ট্রেচারে শুইয়ে রোগীকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়ার পর ১৫ মিনিট কেটে গেলও তিনি চিকিৎসা পাননি অভিযোগ। যদিও চিকিৎসক সামনেই ছিলেন এবং বসে ছিলেন। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসক বসে বসে নার্সদের কয়েকটি নির্দেশ দেন। কিন্তু নিজে উঠে গিয়ে কোনও রোগীকেই দেখবার প্রয়োজন বোধ করেননি। রোগীর এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘উনি সামনেই একটা চেয়ারে বসেছিলেন। বসে বসে মোবাইলে ‘রিল’ দেখছিলেন। সেটা এক বার বলতেই ফুঁসে ওঠেন উনি।’’ মায়ের শারীরিক পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে দেখে ছেলে চিকিৎসককে ডাকতে যান। দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। অভিযোগ, সেই সময় রোগিণীর ছেলেকে থাপ্পড় মারেন ওই চিকিৎসক। তখন জরুরি বিভাগের মধ্যে শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামেচি। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর মধ্যে সামনে এসেছে সিসিটিভি ফুটেজ। সেখানেও দেখা গিয়েছে, একটি চেয়ারে মোবাইল হাতে বসে রয়েছেন চিকিৎসক। আবার চড় মারার যে অভিযোগ উঠেছে, তারও প্রমাণ মিলেছে। মৃতার পুত্র গুরুশরণ সিংহ বলেন, ‘‘ভাইদের সঙ্গে নিয়ে মাকে এমার্জেন্সি ওয়ার্ডে নিয়ে গিয়েছিলাম। মায়ের শারীরিক অবস্থা অত্যান্ত খারাপ ছিল। স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়ার পর এক বার এক জন কম্পাউন্ডার এবং এক জন নার্স দেখে চলে গেলেন। ব্যস, ওইটুকুই। ডাক্তারবাবু সামনে নিজের ডেস্কে বসেছিলেন। উনি মোবাইলে এমনই মজে ছিলেন কোনও রোগীকেই দেখেননি। মায়ের অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখে আমি ডাক্তারবাবুকে বললাম। তখন উনি বললেন, নার্স দেখছেন। সব ঠিক হয়ে যাবে। তার পর আবার বলতে যেতে আমায় চড় মারলেন।’’
এই ঘটনা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে যোগীরাজ্যে। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের এক অধিকর্তা জানিয়েছেন, কেউ দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।