শনিবার রাতেও নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলিবর্ষণ করেছে পাকিস্তানি সেনা। —ফাইল চিত্র।
পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার তদন্তভার হাতে নিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। সংবাদ সংস্থা এএনআই রবিবার সকালে সূত্র উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে। অন্য দিকে, পহেলগাঁও নিয়ে ভারত এবং পাকিস্তানের সম্পর্কের অবনতির আবহে প্রায় প্রতি দিনই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে কাশ্মীরের ভারত-পাক সীমান্তে। এই নিয়ে পর পর তিন রাত সেখানে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হল। অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণরেখার ও পার থেকে রাত হলেই অনবরত গুলি চালাচ্ছে পাক সেনা। পাল্টা জবাব দিয়ে চলেছে ভারতও। শনিবার রাতেও সেই ছবি দেখা গিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে রবিবার একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ২৬ এবং ২৭ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে সীমান্তের ও পার থেকে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তান গুলিবর্ষণ করেছে। লক্ষ্য ছিল ভারতীয় সেনাঘাঁটি। তবে পাল্টা জবাব গিয়েছে এ পার থেকেও। ভারতীয় শিবিরে হতাহতের কোনও খবর নেই। সেনার বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘২৬-২৭ তারিখের রাতে নিয়ন্ত্রণরেখায় বিনা প্ররোচনায় পাকিস্তানি ঘাঁটিগুলি থেকে ছোট অস্ত্রের মাধ্যমে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। টুটমারি গলি এবং রামপুর সেক্টর এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। আমাদের বাহিনী একই ভাবে ছোট অস্ত্রের মাধ্যমে গুলি চালিয়ে জবাব দিয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার রাত থেকে পাকিস্তানের সেনা এই কৌশল নিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তাতে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ করে নয়াদিল্লি। স্থগিত করে দেওয়া হয় সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। এর পর পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ হিসাবে বন্ধ করে দেয় বাণিজ্য। শিমলা চুক্তি স্থগিত করার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসলামাবাদ। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের এই ঘোষণার পর থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। সে দিন থেকে পর পর তিন রাত একই ভাবে গুলি চালিয়েছে পাক সেনা।
পর পর তিন রাতে পাকিস্তানি সেনা কেন একই ভাবে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করল, কেনই বা তারা বড় কোনও হামলার পথে না-হেঁটে ছোট অস্ত্রের ব্যবহার করছে, এখনও স্পষ্ট নয়। সেনার একটি সূত্রে দাবি, দুই দেশের সম্পর্কের ক্রম অবনতির এই পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণরেখায় অশান্তি সৃষ্টি করে পাকিস্তান আসলে বুঝতে চাইছে, ভারতীয় সেনা কতটা প্রস্তুত। তাদের সক্রিয়তা এবং সতর্কতা যাচাই করা হচ্ছে রাতভর গুলি চালিয়ে। তবে ভারত সব রকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।