ডিজিটাল পেমেন্টের বিষয়ে সতর্ক করা হল ইউপিআই ব্যবহারকারীদের। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর ফাঁদে পড়ে সম্প্রতি প্রচুর মানুষ লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। অনলাইনে আর্থিক প্রতারণা রুখতে এ বার ইউপিআই পরিষেবা ব্যবহারকারীদের সাবধান করল ন্যাশনাল পেমেন্ট কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এনপিসিআই)। অর্থ মন্ত্রকের অধীনে থাকা এই সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ডিজিটাল মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের সময়ে ব্যবহারকারীরা যেন আরও বেশি সতর্ক থাকেন। সম্ভাব্য প্রতারণার বিষয়ে আগে থেকে সতর্ক থাকতে বলেছে এনপিসিআই।
কী ভাবে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয় অনলাইনে, সে বিষয়েও সতর্ক করেছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থা। এনপিসিআই জানিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে সরকারি আধিকারিক সেজে কোনও মামলার তদন্তের বিষয়ে প্রতারকেরা যোগাযোগ করেন। মামলার গুরুত্বের কথা বুঝিয়ে আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে হুমকি দেন তাঁরা। সেই ফাঁদে পা দিলেই প্রতারকেরা মামলা মিটমাট করে দেওয়ার নাম করে মোটা অঙ্কের টাকা চেয়ে বসেন। অনেক সময়ে ব্যক্তিগত তথ্যও চাওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে কোনও সরকারি আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে কেউ যোগাযোগ করলে, তা যাচাই করে নেওয়া প্রয়োজন। কোথাও সন্দেহজনক কিছু মনে হলে সেই ফোন বা মেসেজের বিষয়ে ন্যাশনাল সাইবারক্রাইম হেল্পলাইন নম্বর ১৯৩০-এ অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে।
শুধু ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ নয়, আরও বেশ কিছু পন্থা রয়েছে অনলাইন প্রতারকদের। সরকারি হিসাব অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ১২০ কোটি ৩০ লাখ টাকার ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ হয়েছে। এ ছাড়া ওই একই সময়ের মধ্যে লগ্নির টোপ দিয়ে প্রতারণা হয়েছে ২২২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। বন্ধুত্বের অ্যাপ থেকে প্রতারণা হয়েছে ১৩ কোটি ২৩ লাখ টাকার। পাশাপাশি শেয়ার বাজার সংক্রান্ত সাইবার প্রতারণাতেও প্রচুর মানুষ টাকা খুইয়েছেন। ট্রেডিংয়ের টোপে ১৪২০ কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে চলতি বছরের প্রথম চার মাসে।
এর মধ্যে একেবারে নতুন প্রতারণার পন্থা হল ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’। নামের সঙ্গেই রয়েছে ‘গ্রেফতার’। প্রথম বার ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ শুনলে মনে হতেই পারে, হয়তো ডিজিটাল মাধ্যমে গ্রেফতার করা হচ্ছে। প্রতারকেরাও এটাই বোঝানোর চেষ্টা করেন। গ্রেফতারির সঙ্গে এর দূরদূরান্তেও কোনও সম্পর্ক নেই। পুরোটাই জালিয়াতি। সাইবার প্রতারণার ফাঁদ। প্রতারকেরা ফোনকলে বা সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ করে। নিজেদের পরিচয় দেয় পুলিশের কোনও আধিকারিক বলে। কখনও ইডি, সিবিআই বা শুল্ক দফতরের আধিকারিকের পরিচয় দিয়েও ফোন করে। ভুয়ো পরিচয়ের ফাঁদে এক বার পা দিলেই মিথ্যা মামলার ভয় দেখাতে শুরু করে প্রতারকেরা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও এ বিষয়ে সতর্ক করেছে সাধারণ মানুষকে। জানানো হয়েছে, দেশের আইনে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ হলে কোনও কিছুর উল্লেখ নেই।