NOTA

মহারাষ্ট্রের ভোটে দ্বিতীয় স্থানে ‘নোটা’! বাংলার ভোটও সাক্ষী রয়েছে নোটার খেলার

অবশ্য আগেও নোটা বিভিন্ন নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। ২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রেই লাতুর গ্রামীণ এবং পালুস-কারেগাঁও বিধানসভার উপনির্বাচনেও দ্বিতীয় স্থান দখল করেছিল নোটা।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২২ ১৭:০২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

উপনির্বাচনের ফলাফল ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে। উপনির্বাচনেও জয়ের ধারা অব্যাহত রয়েছে বিজেপির। তবে মহারাষ্ট্রের আন্ধেরি পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয় পেয়েছে উদ্ধবপন্থী শিবসেনার প্রার্থী রুতুজা লাটকে। এই আসনে দ্বিতীয় স্থানে কোনও বিরোধী দলের প্রার্থী নয়, আছে নোটা— কোনও প্রার্থীকেই পছন্দ না হলে ভোটাররা যে বিকল্পটি বেছে নিতে পারেন।

অন্য ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মতোই আন্ধেরি পূর্ব কেন্দ্রে গত বৃহস্পতিবার ভোট হয়। রবিবার ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসলে দেখা যায়, বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন রুতুজা। রুতুজা পেয়েছেন মোট বৈধ ভোটের ৭৬.৮৫ শতাংশ। নোটা পেয়েছে ১৪.৭৯ শতাংশ ভোট। বাকি ৬ প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রাপ্ত ভোটের হার ২ শতাংশেও পৌঁছয়নি।

Advertisement

রুতুজার স্বামী, শিবসেনা নেতা তথা এই কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক রমেশ লাটকের প্রয়াণের কারণেই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে। প্রথমে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে স্থির করে বিজেপি। তাদের তরফে প্রার্থীর নামও প্রকাশ করে দেওয়া হয়। কিন্তু পরে বিজেপি জানায় যে, প্রয়াত মহেশের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করার জন্য রুতুজার বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না তারা। বিজেপির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে রাজ্যে তাদের জোটসঙ্গী একনাথ শিন্ডেপন্থী শিবসেনাও। এই সূত্রেই রুতুজার জয় কার্যত সময়ের অপেক্ষা ছিল। রাজ্যের আরও দুই শক্তিশালী দল এনসিপি এবং কংগ্রেসও শিবসেনার সঙ্গে ‘মহাবিকাশ আঘাডী’ জোটে থাকায়, তারাও রুতুজাকে সমর্থন জানায়।

অবশ্য আগেও নোটা বিভিন্ন নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে। ২০১৯ সালে মহারাষ্ট্রেই লাতুর গ্রামীণ এবং পালুস-কারেগাঁও বিধানসভার উপনির্বাচনেও দ্বিতীয় স্থান দখল করেছিল নোটা।

২০১৩ সালে একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে নির্বাচনী বিকল্প হিসেবে অন্য প্রার্থীদের নাম এবং প্রতীকের নীচে বাধ্যতামূলক ভাবে ‘নোটা’ রাখার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের পর ছত্তীসগঢ়, মিজোরাম, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং দিল্লি বিধানসভার নির্বাচনে প্রথম নোটা ব্যবহৃত হয়। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং একাধিক রাজ্যের নির্বাচন, উপনির্বাচনে দেখা যায়, প্রার্থীদের জয়-পরাজয় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে নোটা। অনেক সময় জয়ী প্রার্থীর জয়ের ব্যবধানকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে নোটা। ২০১৭ সালের গুজরাত বিধানসভার নির্বাচনেই যেমন দেখা যায়, রাজ্যের ১১৮টি বিধানসভা আসনের ফলে ভোট শতাংশের নিরিখে তৃতীয় স্থানে রয়েছে নোটা, বিজেপি এবং কংগ্রেসের ঠিক পরেই।

নোটার কামাল টের পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ার বড়জোড়া বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সোহম চক্রবর্তীকে ৬১৬ পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী সুজিত চক্রবর্তী। ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওই আসনে নোটার পক্ষে ৪,২৩৫টি ভোট পড়েছে। একই ভাবে ওই নির্বাচনেই রায়দীঘি বিধানসভা কেন্দ্রে জোটের প্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে ১,২২৯ ভোটের ব্যবধানে পরাস্ত করেন তৃণমূল প্রার্থী দেবশ্রী রায়। ওই কেন্দ্রে নোটার পক্ষে ১,৭১০টি ভোট পড়ে। ২০১৬ সালে ছাতনা বিধানসভা কেন্দ্রে আবার নোটা ৭,৭০৯টি ভোট পায়। এ দিকে ওই কেন্দ্রের বিজয়ী আরএসপি প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান ২,৪৭১। পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট নোটার পক্ষে পড়া ভোটের একটি অংশ যুযুধান দুই প্রার্থীর কেউ এক জন পেলে ফলাফল অন্য রকম হতেই পারত।

আরও পড়ুন
Advertisement