Rajkot Gaming Zone Fire

স্ত্রী-শ্যালিকাকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন রাজকোটের গেমিং জ়োনে, ফেরা হল না! ঝলসে মৃত্যু নবদম্পতির

শনিবার সন্ধ্যায় গুজরাতের রাজকোটের এক গেমিং জ়োনের অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩২। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন অক্ষয়, তাঁর স্ত্রী খেয়াতি এবং শ্যালিকা হরিতা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২৪ ১৪:১৩
Newly-Married couple killed in Rajkot gaming zone fire

রাজকোটের গেমিং জ়োনের অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু নবদম্পতির। ছবি: সংগৃহীত।

স্ত্রীকে নিয়ে আনন্দ করতে রাজকোটের গেমিং জ়োনে গিয়েছিলেন অক্ষয় ঢোলারিয়া নামে এক যুবক। সঙ্গে ছিলেন শ্যালিকাও। সদ্যই বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। হাসি-ঠাট্টা-খুনসুটিতে মেতে ছিলেন সকলেই। সেই আনন্দকে আচমকাই গ্রাস করল আগুন। স্ত্রী এবং শ্যালিকাকে নিয়ে গেমিং জ়োন থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেন না। ঝলসে মৃত্যু হল তিন জনেরই।

Advertisement

শনিবার সন্ধ্যায় গুজরাতের রাজকোটের এক গেমিং জ়োনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিভীষিকা তাড়া করছে প্রাণে বেঁচে যাওয়া মানুষদের। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩২। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন অক্ষয়, তাঁর স্ত্রী খেয়াতি এবং শ্যালিকা হরিতা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ২৪ বছর বয়সি অক্ষয় বাবা-মায়ের সঙ্গে কানাডায় থাকেন। বিয়ে করতেই ভারতে এসেছিলেন।

খেয়াতি রাজকোটের বাসিন্দা। গত ১৮ মে আদালতে সইসাবুদ করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন অক্ষয় এবং খেয়াতি। চলতি বছরের শেষের দিকেই ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই শোকের ছায়া নেমে এল দুই পরিবারে।

রাজকোটের গেমিং জ়োনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ন’টি শিশুরও মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে আরও অনেকে। শীর্ষ আইপিএস আধিকারিক সুবাষ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করেছে। রাজকোটের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (এসিপি) বিনায়ক পটেল জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের দেহগুলি এমন ভাবে ঝলসে গিয়েছে যে, শনাক্ত করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অক্ষয়ের পরিচয় জানা যায় তাঁর বিয়ের আংটি থেকে। তবে খেয়াতি এবং তাঁর বোন হরিতার দেহ শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হয়।

পুলিশ সূত্রে খবর, গেমিং জ়োনের ভিতরে থাকা যে বহুতলে আগুন লেগেছিল, সেই বহুতলটি গোটাটাই দাহ্য পদার্থে ঠাসা ছিল। বহুতলের অন্দরসজ্জার জন্য রাবার, রেক্সিন, থার্মোকল এবং ফোমের মতো জিনিস ব্যবহার করা হয়েছিল। তদন্তকারীরা আরও জানাচ্ছেন, গেমিং জ়োনের ওই বহুতলে ২০০০ লিটার ডিজ়েল এবং ১৫০০ লিটার পেট্রল মজুত করা ছিল। তিন তলা ওই ভবনের নীচের তলাতে মজুত ছিল ওই জ্বালানি। আর আগুন প্রথম লেগেছিল নীচের তলাতেই।

স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজকোটের এই গেমিং জ়োন অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রতি দিন বেশ ভিড় হত এই জ়োনে। তবে সপ্তাহান্তে নতুন নতুন ‘অফার’ থাকায় ভিড় আরও বেশি হয়। এ সপ্তাহে ৫০০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছিল ৯৯ টাকায়। ফলে সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি অনেকেই। তাই শনিবার ভিড়ও হয়েছিল যথেষ্ট। অন্য দিকে, ওই গেমিং জ়োনের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই বহুতলে ওঠানামার জন্য একটি মাত্রই সিঁড়ি ছিল। ফলে নীচ থেকে আগুন উপরের তলের দিকে যেতে থাকায় উপর থেকে নামার উপায় ছিল না। ফলে দ্বিতল এবং তৃতীয় তলে অনেকেই আটকে পড়েছিলেন। এ ছাড়াও এই গেমিং জ়োনের কোনও ‘ফায়ার লাইসেন্স’ ছিল না। দমকলের ছাড়পত্রও ছিল না তাদের কাছে। তার পরও কী ভাবে ওই গেমিং জ়োন চলছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement