— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল জঙ্গিদের গুলিতে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু আট দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত নাগাল পাওয়া যায়নি হামলাকারী জঙ্গিদের। গোটা উপত্যকা জুড়ে পুরোদমে চলছে তল্লাশি অভিযান। সেই আবহেই এ বার সদ্য কাশ্মীর থেকে ফেরা মহারাষ্ট্রের এক যুবক দাবি করলেন, হামলার ঠিক আগের দিন নাকি এক ‘জঙ্গি’র সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁর। হয়েছিল সংক্ষিপ্ত বাক্য বিনিময়ও!
পহেলগাঁও কাণ্ডের পর দিনই জঙ্গিদের তিন জনের হাতে আঁকা ছবি (স্কেচ) প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। তাদের মধ্যেই এক জনকে আগে দেখেছেন বলে দাবি করেছেন মহারাষ্ট্রের ওই যুবক। শুধু তা-ই নয়, ওই জঙ্গির সঙ্গে নাকি কথাও হয়েছিল তাঁর! সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্রের জালনা শহরের বাসিন্দা ওই যুবকের নাম আদর্শ রাউত। সম্প্রতি কাশ্মীর থেকে ফিরেছেন তিনি। ওই যুবকের দাবি, পহেলগাঁওয়ের অভিযুক্ত জঙ্গিদের এক জনের সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের আগের দিনই কথা হয়েছিল তাঁর। তিনি জানিয়েছেন, গত ২১ এপ্রিল বৈসরন উপত্যকার একটি খাবারের দোকানে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। যুবকের আচরণ বেশ ‘সন্দেহজনক’ ছিল বলে জানিয়েছেন আদর্শ। সেই যুবকের সঙ্গে মিনিটখানেক কথাও হয় তাঁর।
আদর্শের কথায়, ‘‘ওই যুবক আমাকে বলেন, তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে না তুমি কাশ্মীরের বাসিন্দা! তোমাকে কাশ্মীরিদের মতো দেখতে নয়।’’ এর পর তাঁর ধর্ম, বাসস্থান সম্পর্কে খুঁটিনাটি প্রশ্ন করতে শুরু করেন ওই যুবক। সংবাদ সংস্থাকে আদর্শ জানিয়েছেন, গত ২১ এপ্রিল তিনি ঘোড়ায় চড়ে বৈসরনে গিয়েছিলেন। সেখানে পৌঁছে প্রথমেই তিনি একটি খাবারের দোকানে যান। তখন হঠাৎ একজন যুবক তাঁর কাছে এসে প্রশ্ন করেন, তিনি কাশ্মীরি কি না। উত্তর পেয়ে ওই যুবক তাঁর সঙ্গীর দিকে ফিরে বলেন, ‘‘আজ ভিড় কম।’’ অযাচিত ভাবে এসে এই কথোপকথনে কিছুটা বিরক্তই হয়েছিলেন আদর্শ। কিন্তু পরদিন ওই একই জায়গায় জঙ্গি হামলার খবর পেয়ে বিষয়টি বুঝতে পারেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তদন্তকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই যুবক।
আদর্শের কথায়, ‘‘জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ স্কেচগুলি প্রকাশ করার পর সেগুলি দেখে আমি গোটা বিষয়টা বুঝতে পারি। এর পরেই কাশ্মীরে আমার অভিজ্ঞতার বিস্তারিত বিবরণ এনআইএকে ইমেল করে পাঠাই। আমার যেটুকু মনে আছে, তার সবই লিখেছি ওই ইমেলে। আমি আরও জানিয়েছি যে নেটওয়ার্কে সমস্যার কারণে আমি প্রথমে খাবারের স্টলের মালিককে টাকা দিতে পারিনি। আমি তাঁর ফোন নম্বর নিয়েছিলাম এবং পাহাড় থেকে নেমে আসার পর তাঁকে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। ওই দোকান মালিকের থেকেও তদন্তের প্রয়োজনীয় সূত্র মিলতে পারে।’’ তবে আদর্শ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এনআইএ-র কাছ থেকে তিনি কোনও উত্তর পাননি। আদর্শ বলেছেন, ‘‘তারা যদি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে, তা হলে আমি তাদের সম্ভাব্য সব রকম উপায়ে সহযোগিতা করব।’’