— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
পাগল কুকুরে কামড়েছিল তামিলনাড়ু নিবাসী এক যুবককে। জলাতঙ্কে আক্রান্ত ওই যুবক ক্রমেই মানসিক স্থিতি হারাচ্ছিলেন। শেষমেশ মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করলেন তিনি। ঘটনার একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠছেন অনেকেই।
মঙ্গলবার তামিলনাড়ুর কোয়মবত্তূরের একটি সরকারি হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম রাম চন্দ্র (৩৫)। ওড়িশার বাসিন্দা রামকে দিন কয়েক আগে একটি পাগল কুকুর কামড়েছিল। ক্রমশ তাঁর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। র্যাবিস ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে নিভৃত ওয়ার্ডে অন্য রোগীদের থেকে আলাদা রাখা হয়েছিল রামকে। সেখানেই মঙ্গলবার নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেন তিনি।
হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রোগ যত বাড়ছিল, ততই আরও বেশি করে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছিলেন রাম। ক্রমশ মানসিক স্থিতিশীলতাও হারাচ্ছিলেন তিনি। মাঝে মাঝেই উন্মত্তের মতো আচরণ করছিলেন, যা জলাতঙ্কের অন্তিম পর্যায়ের লক্ষণ। ওষুধ দেওয়ার জন্যও রামের কাছে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। আতঙ্কে ছিলেন হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, মঙ্গলবার নিভৃত ওয়ার্ডে থাকাকালীন আচমকা নোটিসবোর্ডের উপর লাগানো কাচের একটি আস্তরণ ভেঙে ফেলেন রাম। সেই কাচের টুকরো দিয়েই মুহূর্তে নিজের গলা কেটে ফেলেন তিনি। যে হেতু র্যাবিস ভাইরাস শারীরিক তরলের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়, সে জন্য প্রথমে হাসপাতালের কর্মীরা কেউ আহত রামের দিকে এগিয়ে যাননি। তার পরিবর্তে তাঁরা দ্রুত পুলিশে খবর দেন। পুলিশ যত ক্ষণে পৌঁছোয়, তত ক্ষণে রামের শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকদের বহু প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আর বাঁচানো যায়নি রামকে।
ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কী ভাবে ওই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে ওই ঘটনার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরেই জলাতঙ্কের বিপদ এবং পশুর কামড়ের পর সময় মতো টিকাদানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, জলাতঙ্ক একটি সংক্রামক রোগ, যা মূলত র্যাবিস ভাইরাসে আক্রান্ত প্রাণীর কামড়ের মাধ্যমে সংক্রামিত হয়। শুরুতে জ্বর এবং মাথা ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা দিলেও দ্রুত অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এক পর্যায়ে আক্রমণাত্মক মনোভাব, অতিরিক্ত লালাক্ষরণ, পক্ষাঘাত এবং জলে প্রবল আতঙ্ক দেখা দেয়। শেষমেশ মৃত্যু হয় রোগীর। তবে টিকাকরণ করানো থাকলে এই রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।