নান্দেড়ে জনসভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী ‘লাল মলাটের’ সংবিধানের ভিতরটা ‘ফাঁকা’ বলেছেন, কারণ তিনি কোনও দিন সংবিধান পড়েননি। আজ মহারাষ্ট্রের নান্দেড় এবং নান্দুরবারের জনসভায় এ ভাবেই পাল্টা আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
ভোটমুখী মহারাষ্ট্রে ক্রমশ তপ্ত হয়ে ওঠা প্রচারসভায় সম্প্রতি রাহুলকে নিশানা করে মোদী বলেছিলেন, ‘‘ওরা (কংগ্রেস) সংবিধানের নামে একটা লাল বই দেখাচ্ছে। প্রচ্ছদে লেখা ‘ভারতের সংবিধান’, কিন্তু বইয়ের পাতাগুলি সাদা, কিছুই লেখা নেই। ওরা বাবাসাহেবকে কতটা ঘৃণা করে, সেটা এখান থেকেই বোঝা যায়।’’ আজ সেই লাল মলাটের সংবিধান তুলে ধরে রাহুল পাল্টা বলেন, “শুনেছি মোদীজি বলেছেন, আমি কী হাতে নিয়েছি? ভিতরে তো কিছুই নেই! আমি ওঁকে বলতে চাই, আপনি সংবিধান বোঝেননি। এতে স্রেফ হিন্দুত্ব নয়, অম্বেডকর, ফুলেজি, বিরসা মুন্ডা, গৌতম বুদ্ধের স্বর রয়েছে। আপনি বলছেন ভিতরের পাতা ফাঁকা, কারণ আপনি সংবিধান পড়েননি। যদি পড়তেন, তা হলে আজ যা যা করছেন, তা করতেন না।”
সম্প্রতি নাগপুরে কংগ্রেসের রুদ্ধদ্বার সভায় প্রত্যেকের হাতে সংবিধানের একটি কপি দেওয়া হয়েছিল। তবে কংগ্রেসের দাবি, সেগুলি আদতে নোটবই। খরচ কমাতে সংবিধানের লাল প্রচ্ছদের নীচে সাদা পাতা জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। বিজেপি ওই সাদা পাতা নিয়েই সরব। ‘শহুরে নকশাল’দের সমর্থনেই রাহুল লাল মলাটের সংবিধান হাতে নেন বলে তারা অভিযোগ তোলে। আজ রাহুল বলেন, সংবিধানের লাল বা নীল রংয়ে কিছু যায়-আসে না। “ভারতের আত্মা এবং ইতিহাস এই বইতে রয়েছে। বিজেপি এবং আরএসএস-এর নেতারা সামনে নয়, বন্ধ ঘরের মধ্যে লুকিয়ে সংবিধানকে খতম করার পরিকল্পনা করছেন।”
এখানেই না থেমে রাহুল দাবি করেন, “নারী এবং দলিতের রক্ষাকবচ এই সংবিধান। সবুজ বিপ্লব, সফেদ বিপ্লব এই বই ছাড়া হত না। আজ আমরা যে ভোট দিতে পারছি, তা এই বইয়ের কারণে। নরেন্দ্র মোদী দেশের ২৫ জন ধনী ব্যবসায়ীর ১৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মকুব করেছেন। এই বইয়ে কোথাও লেখা নেই যে, গরিব কৃষকদের ঋণ মাফ না করে ধনীদের মাফ করতে হবে।”
প্রতিটি জনসভাতেই কংগ্রেসকে বিঁধে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, তফসিলি জাতি, জনজাতি, ‘পিছড়ে’ বর্গকে বিভিন্ন জাতের নামে বিভাজনের চেষ্টা করছে তারা। আজ জাতগণনার বিষয়টির বিশদে ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাহুল। বলেছেন, “বিজেপি কেন জাতগণনা করছে না? আমি সংসদে এই প্রশ্ন মোদীজিকে করেছি, আজও মহারাষ্ট্রের মাটিতে দাঁড়িয়ে করতে চাই। দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ দলিত, জনজাতি, পিছড়ে বর্গের। কিন্তু কোনও উচ্চপদে তাঁদের প্রতিনিধিত্বই নেই বা থাকলেও খুবই কম।” রাহুলের অঙ্গীকার, বিরোধী জোট ক্ষমতায় এলে দলিত-জনজাতির সংরক্ষণ ৫০ শতাংশের বেশি বাড়ানো হবে।