সুশীল নাথানিয়েল। ছবি: সংগৃহীত।
এক জন বেঁচে গিয়েছিলেন কলমা পড়ে। অন্য জন কলমা পড়তে না পারায় প্রাণ হারালেন।
জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা সুশীল নাথানিয়েলও। পেশায় এলআইসি এজেন্ট সুশীলের মরদেহ বুধবার রাতে ইনদওরের বাড়িতে পৌঁছোয়। মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব জানিয়েছেন, সুশীলের স্ত্রী তাঁকে বলেন যে, জঙ্গিরা কলমা পড়তে বলেছিল। কিন্তু কলমা পড়তে পারেননি সুশীল। তার পরেই তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রী এবং দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন সুশীল। জঙ্গিদের গুলিতে আহত হয়েছেন সুশীলের কন্যাসন্তান আকাঙ্ক্ষাও। তার পায়ে গুলি লাগে।
কলমা ‘পড়তে না-পারায়’ সুশীলের প্রাণ গেলেও কলমা পড়েই নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছেন বলে সম্প্রতি দাবি করেছেন মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ের ওই ঘটনাস্থলে থাকা অসমের বাসিন্দা দেবাশিস ভট্টাচার্য। অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক দেবাশিস জানান, বন্দুকধারী জঙ্গিরা তেড়ে এসেছিল। উপস্থিত বুদ্ধির জোরে তিনি কলমা পড়তে শুরু করেছিলেন। দেবাশিস মনে করেন, সেই কারণেই তাঁকে জঙ্গিরা আর গুলি করেনি।
‘নিউজ ১৮’-কে দেবাশিস বলেন, ‘‘পাশের গাছের তলায় দাঁড়িয়ে অনেকে বিড়বিড় করে কলমা পড়ছিলেন। আমি তাঁদের দেখাদেখি সহজাত ভাবেই কলমা পড়তে শুরু করি। কিছু ক্ষণের মধ্যে এক জঙ্গি আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। আমার পাশে যিনি ছিলেন, সরাসরি তাঁর মাথায় গুলি করে।’’ এর পর দেবাশিসের দিকে তাকায় সেই জঙ্গি। তাঁর কথায়, ‘‘সোজাসুজি আমার দিকে তাকিয়ে ও জিজ্ঞেস করল, ‘কী করছ?’ আমি তখন আরও জোরে জোরে কলমা পড়তে শুরু করে দিয়েছিলাম। আমি জানি না, কী ভেবে আমি এটা করলাম। এর পর ওই জঙ্গি মুখ ফিরিয়ে চলে গেল।’’
পহেলগাঁওয়ের হামলায় এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের অধিকাংশই পর্যটক। অভিযোগ, পর্যটকদের ধর্মীয় পরিচয় জেনে বেছে বেছে গুলি করা হয়েছে। একটি বিশেষ ধর্মের মানুষ ছাড়া কাউকে রেয়াত করা হয়নি। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার শাখা দ্য রেজিসট্যান্স ফোর্স (টিআরএফ) হামলার দায় স্বীকার করেছে। নিহতদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তিন জন রয়েছেন।