Nitish Kumar

নীতীশের কাছে কেসিআর, বিরোধী জোটের আহ্বান

চন্দ্রশেখর তাঁর মন্ত্রিসভাকে নিয়ে বৈঠক করার পরে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর জরুরি দলীয় বৈঠকের ডাক দিয়ে রেখেছিলেন। তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির সব বিধায়ক এবং সাংসদকে ওই বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
পটনা শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:০৬
নজরে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন।

নজরে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। ছবি: পিটিআই

নজর ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে। স্লোগান ‘বিজেপি-মুক্ত ভারতের’। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বুধবার পটনায় গিয়ে দেখা করলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের সঙ্গে। বিরোধী জোট তৈরির ক্ষেত্রে এই দুই নেতার কাছাকাছি আসাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিহারের বিজেপি নেতা সুশীল মোদী অবশ্য একে ‘দুই দিবাস্বপ্নবিলাসীর মিলন’ বলে কটাক্ষ করেছেন।

মঙ্গলবারই চন্দ্রশেখর তাঁর মন্ত্রিসভাকে নিয়ে বৈঠক করার পরে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর জরুরি দলীয় বৈঠকের ডাক দিয়ে রেখেছিলেন। তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির সব বিধায়ক এবং সাংসদকে ওই বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, তেলঙ্গানায় কেসিআর হয়তো নির্বাচন এগিয়ে আনার কথা ভাবতে পারেন। সম্প্রতি বেশ কিছুদিন যাবৎ কেসিআর-বিজেপি সমীকরণে পট পরিবর্তন হয়েছে। এক দিকে, বিজেপি দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে ক্ষমতা বিস্তারের লক্ষ্যে ঝাঁপাচ্ছে, অন্য দিকে বিপদ বুঝে কেসিআর-এর মতো আঞ্চলিক দলের নেতাও বিজেপি-বিরোধিতায় সুর চড়াচ্ছেন। কেন্দ্রে বিজেপি-বিরোধী শিবির গঠনের ব্যাপারে কিছু দিন ধরেই তৎপর রয়েছেন তিনি। দেখা করেছেন একাধিক দলের নেতার সঙ্গে। ইতিমধ্যে বিহারে নীতীশ বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে তেজস্বীর হাত ধরে নতুন সরকার গঠন করেছেন। রাজনৈতিক শিবিরে জোর গুঞ্জন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়াই আসলে নীতীশের লক্ষ্য। এই পটভূমিতে আজ নীতীশ-কেসিআর বৈঠক তাই আলাদা ভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।

Advertisement

আজকের সাংবাদিক সম্মেলনে কেসিআর বলেন, ‘‘আমার অগ্রজ নীতীশজির সঙ্গে কথা হল। বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতেই হবে, এ বিষয়ে আমরা একমত। কোনও উন্নয়ন নেই, শুধু লম্বা-চওড়া কথা। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়ছে। দেশকে ভাগ করার চক্রান্ত চলছে। কোথায় মেক ইন ইন্ডিয়া? জাতীয় পতাকাও চিন থেকে আসছে!’’

আগামী তেলঙ্গানা নির্বাচনে কেসিআর-এর হাত শক্ত করার কথা বলেন নীতীশ। নাম না করে বিজেপিকে ঠুকে তিনি বলেন, ‘‘আপনার (কেসিআর) বিরোধীরা আপনার বিরুদ্ধে অনেক কথা বলে। কিন্তু তারা জানে না আপনি কী ধাতুতে তৈরি। একা লড়াই করে আপনি তেলঙ্গানা তৈরি করেছেন। মানুষ আপনাকে ছেড়ে যাবে না।’’ বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার প্রসঙ্গে নীতীশ বলেন, ‘‘আমি ওদের ছেড়ে এসেছি। অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানা আলাদা ছিল। উনি সবাইকে সম্মান দিতেন। এখন কোনও কাজ হয় না, শুধু মাত্রাছাড়া প্রচার আর প্রসার!’’

কেসিআর যোগ করেন, ‘‘নীতীশজি মনে করেন বিজেপিমুক্ত ভারত গড়তে গেলে বিরোধীদের একসঙ্গে আসতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের এখন স্লোগান একটাই, বেচো ইন্ডিয়া। ওরা সব বেচে দিচ্ছে। জাতীয় পতাকার অপমান করছে, গান্ধীজির অপমান করছে। ঐক্যবদ্ধ আর উন্নত দেশ গড়তে হলে বিজেপি-মুক্ত ভারত গড়তেই হবে আর তার জন্য সব দলকে একত্র হতেই হবে। কোনও তৃতীয় ফ্রন্ট নয়, ওটাই মূল ফ্রন্ট। নীতীশজি খুবই পরিচিত, প্রবীণ নেতা। তবে জোটের নেতা কে হবেন, সেটা বৈঠকের পরে সবার মত নিয়ে ঠিক হবে।’’

কোন বৈঠক কবে হবে— সেটা অবশ্য স্পষ্ট করেননি কেসিআর। বিহারের বিজেপি নেতা সুশীল মোদী আজকের বৈঠককে ‘নতুন কমেডি শো’ বলেছেন। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘নিজের রাজ্যে জমি হারিয়েছেন এমন দু’জন নেতা এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খোয়াব দেখছেন। এই দিবাস্বপ্নবিলাসীরা নরেন্দ্র মোদীর সামনে দাঁড়াতে পারবেন না।’’

আরও পড়ুন
Advertisement