Kailash Vijayvargiya

Kailash: শেষবেলায় বৈঠকে দেখা গেল কৈলাসকে, তবে শোনা গেল না, হাজির রইলেন না শিবপ্রকাশ

বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে কৈলাস উপস্থিত থাকলেও কিছু বলেননি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২১ ১৮:৫৯
কৈলাস এবং শিবপ্রকাশ।

কৈলাস এবং শিবপ্রকাশ।

বিজেপি-র কার্যকারিণী বৈঠকের একেবারে শেষবেলায় দেখা গেল দলের রাজ্য পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে। তবে শুধু দেখাই গেল। শোনা গেল না। বৈঠকে উপস্থিত বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে কৈলাস উপস্থিত থাকলেও কিছু বলেননি। আনন্দবাজার অনলাইন মঙ্গলবার সকালেই জানিয়েছিল, বৈঠকের বক্তার তালিকায় নামই নেই কৈলাসের। একই সঙ্গে জানানো হয়েছিল, রাজ্য বিজেপি আশা করছে, বিকেলে নড্ডার আগে তিনি কিছুক্ষণ বলতে পারেন। কিন্তু দেখা গেল শ্রোতার ভূমিকাতেই রইলেন বিধানসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে রাজ্য বিজেপি-র অন্যতম কাণ্ডারির ভূমিকায় থাকা কৈলাস।

মঙ্গলবার হেস্টিংসে রাজ্য বিজেপি-র কার্যকারিণী বৈঠক শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ। প্রথমেই বক্তৃতা করেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশিই ভাষণ দেন বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ রাজ্য নেতাদের অনেকে। বক্তা হিসেবে ছিলেন রাজ্য বিজেপি-র দুই সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন এবং অমিত মালব্য। কিন্তু ছিলেন না পর্যবেক্ষক কৈলাস।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের দিল্লি দফতর থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বাংলার দুই বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরী। ছিলেন কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও। মঙ্গলবার অসমেও বিজেপি-র রাজ্য কার্যকারিণী বৈঠক ছিল। বেলা ১১টা থেকে সেই বৈঠকে ছিলেন সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডা। বিকেলে তিনি বাংলার বৈঠকে যোগ দেন। কৈলাস বৈঠকে আসেন তাঁরই সঙ্গে। কিন্তু তিনি আগাগোড়াই ছিলেন মৌনীবাবা হয়ে।

কৈলাসের নাম বক্তার তালিকায় না থাকলেও দীর্ঘদিন বাংলার দায়িত্বে-থাকা কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদক (সংগঠক) শিবপ্রকাশের নাম কিন্তু ছিল বক্তার তালিকায়। কিন্তু তাঁকে বৈঠকে দেখা যায়নি। রাজ্য বিজেপি-র এক নেতা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পঞ্জাবেও কার্যকারিণী বৈঠক ছিল। সেখানে বেশি সময় দিতে হওয়ায় বাংলার শীর্ষবৈঠকে হাজির হতে পারেননি শিবপ্রকাশ। প্রসঙ্গত, মূলত বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিবপ্রকাশ সোমবার অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্য কার্যকারিণী বৈঠকেও হাজির ছিলেন। তিনি কেন রইলেন না আর কৈলাস কেন চুপ রইলেন তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই বিজেপি-র অন্দরে। তবে রাজ্য বিজেপি-র এক শীর্ষ নেতা বলেন, “যাঁরা জল্পনা করছেন তাঁদের করতে দিন। এর মধ্যে লুকোছাপার কিছু নেই। কেন্দ্রীয় নেতাদের শুধু একটা রাজ্যের কথা ভাবলেই হয় না। তাঁদের দায়িত্ব অনেক বড়।”

তবে যে যা-ই বলুন, কৈলাস ও শিবপ্রকাশ প্রসঙ্গে আলোচনা চলছেই। কেউ কেউ বলছেন, রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের জন্য যে দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ দলের অন্দরে, তাঁরা হলেন কৈলাস ও শিবপ্রকাশ। বৈঠকের মধ্যে তাঁদের কোনও ‘অস্বস্তি’-তে মধ্যে পড়তে দিতে চান না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সে জন্যই তাঁদের আড়ালে রাখা হয়েছে। কৈলাস ভার্চুয়াল মাধ্যমে কিছুক্ষণের জন্য উপস্থিত থাকলেও পাশে ছিলেন নড্ডা। সেই সময়ে তাঁকে লক্ষ্য করে কিছু বলার উপায় ছিল না। কারণ, তখন নড্ডা বক্তৃতা করছেন।

সম্প্রতি মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরে যাওয়ায় কৈলাস নিজেও কিছুটা চাপে রয়েছেন বলে অনেকে মনে করছেন। রাজ্য বিজেপি-র একাধিক সূত্রের বক্তব্য, মুকুলের দলত্যাগ আটকানোর জন্য কৈলাসকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু তাতে সফল হননি ইনদওরের প্রাক্তন মেয়র। তাতে অস্বস্তিতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় বিজেপি। এর পরে বাংলার দায়িত্ব থেকে তাঁকে ‘মুক্ত’ করে দেওয়ার আলোচনাও চলছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। বস্তুত, অনেকের মতে, সে কারণেই মঙ্গলবারের শীর্ষবৈঠকে তাঁকে ‘মৌনী’ করে রাখা হয়েছে। উপস্থিতিটি ছিল নিছকই ‘নিয়মরক্ষা’র।

আরও পড়ুন
Advertisement