মহাকাশে ইসরোর স্পেস ডকিং প্রক্রিয়া সফল হয়েছে। ছবি: ইসরো।
দুই কৃত্রিম উপগ্রহকে মহাকাশে ‘হ্যান্ডশেক’ করাল ইসরো। সফল হল ‘স্পেস ডকিং’ প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার সকালেই এই সাফল্যের কথা সমাজমাধ্যমে জানিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে স্পেস ডকিং প্রক্রিয়ায় সাফল্য পেল ভারত। এই সাফল্যের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইসরোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এর আগে গত রবিবার স্পেস ডকিংয়ের চেষ্টা করেছিলেন ইসরোর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। দুই কৃত্রিম উপগ্রহকে তারা সে দিন প্রথমে ১৫ মিটার এবং তার পর তিন মিটার পর্যন্ত কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু সে দিন কাঙ্ক্ষিত ‘হ্যান্ডশেক’ হয়নি। দু’টি উপগ্রহ পরস্পরকে স্পর্শ করার আগেই তাদের সরিয়ে আনা হয়েছিল। ইসরো জানিয়েছিল, পরবর্তী পদক্ষেপের কথা তারা পরে জানাবে। অবশেষে বৃহস্পতিবার সেই প্রক্রিয়া সফল হয়েছে।
ইসরো সমাজমাধ্যমে লিখেছে, ‘‘স্পেস ডকিং প্রক্রিয়া সফল হল। এটা একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। প্রথমে আমরা ১৫ মিটার এবং তিন মিটার পর্যন্ত পরীক্ষামূলক প্রচেষ্টা করেছিলাম। তার পর দু’টি উপগ্রহের পরস্পরকে স্পর্শের প্রক্রিয়াটি নির্ভুল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যাহারও সম্পূর্ণ। বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে ভারত স্পেস ডকিংয়ে সাফল্য পেল। সমগ্র টিমকে অভিনন্দন।’’
ইসরো জানিয়েছে, স্পেস ডকিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরেও সব তাদের অধীনেই রয়েছে। দু’টি উপগ্রহে তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ‘আনডকিং’ প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হবে। ইসরোর সাফল্যে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘ইসরোয় আমাদের বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন। স্যাটেলাইটগুলির স্পেস ডকিং সফল হয়েছে। আগামী দিনে মহাকাশ বিজ্ঞানে ভারতের লক্ষ্যপূরণের পথে এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক।’’
কী এই স্পেস ডকিং?
ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দু’টি কৃত্রিম উপগ্রহ— স্পেডেক্স ১ (চেজ়ার) এবং ২ (টার্গেট) একই গতিবেগে একই দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার পর মহাকাশে (প্রায় ৪৭০ কিলোমিটার উচ্চতায়) একই বিন্দুতে একসঙ্গে পৌঁছবে এবং একত্রিত হবে। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার নাম স্পেস ডকিং। বৃহস্পতিবার তা-ই করে দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
গত ৩০ ডিসেম্বর স্পেস ডকিংয়ের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টারের ‘লঞ্চিং প্যাড’ থেকে পিএসএলভি-সি৬০ রকেট উৎক্ষেপণ করে ইসরো। ওই রকেটের প্রধান পেলোড হিসাবেই পাঠানো হয়েছিল স্পেডেক্স ১ এবং ২-কে। এ ছাড়া, ২৪টি সেকেন্ডারি পেলোডও পাঠানো হয়েছিল। পিএসএলভি-সি৬০ মিশনের প্রধান জয়কুমার জানান, ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করতে বদ্ধপরিকর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। সেই লক্ষ্যপূরণের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ স্পেস ডকিং।