— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
মলদ্বীপের বিমানক্ষেত্রগুলি থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর কথা ঘোষণা করল কেন্দ্র। পরিবর্তে সেখানে মোতায়েন করা হবে ‘যোগ্য ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ’। বৃহস্পতিবার এই কথা জানাল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। যদিও সেনা সরিয়ে ঠিক কাদের পাঠানো হবে মলদ্বীপে, সে বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে কিছু জানায়নি বিদেশ মন্ত্রক। ক্ষমতায় আসার পরেই মলদ্বীপ থেকে সেনা সরানোর জন্য সরকারি ভাবে আর্জি জানিয়েছিল মুইজ্জু সরকার। দিন কয়েক আগে বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছিল, তাদের নির্ধারিত দিনের মধ্যেই ভারত পদক্ষেপ করতে রাজি হয়েছে। যদিও ভারত অন্য কথা বলেছিল। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি মলদ্বীপের দাবিই সত্যি হচ্ছে?
২ ফেব্রুয়ারি নয়াদিল্লিতে মলদ্বীপ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছে কেন্দ্রের। দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষস্তরের বৈঠক ছিল সেটি। চলতি মাসের শেষে তৃতীয় বৈঠক রয়েছে। সাপ্তাহিক সাংবাদিক বৈঠকে সেই নিয়েই কথা বলেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জায়সওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের যা বলার ছিল, তা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ করেছিল। শীর্ষস্তরের দ্বিতীয় বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত। তৃতীয় শীর্ষস্তরের বৈঠক হবে।’’ তার পরেই জায়সওয়াল বলেন, ‘‘মলদ্বীপে এখন যাঁরা রয়েছেন মলদ্বীপে, তাঁদের জায়গায় যোগ্য ভারতীয় প্রযুক্তিবিদদের পাঠানো হবে।’’
দ্বিতীয় বৈঠকের পর মলদ্বীপের বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, ১০ মার্চের মধ্যে মলদ্বীপে তিনটি বিমানক্ষেত্রের মধ্যে একটি থেকে সেনা সরাবে ভারত। বাকি দু’টি জায়গা থেকে ১০ মের মধ্যে ভারত সেনা সরিয়ে নেবে। বিবৃতিতে মুইজ্জু সরকার এও দাবি করেছিল, এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে সহমত হয়েছে ভারত। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মলদ্বীপে বিমান চলাচল করতে পারে এমন পরিস্থিতি বজায় রাখতে পারস্পরিক সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছে ভারত। যাতে মলদ্বীপের মানুষকে মানবিক সাহায্য এবং ওষুধপত্র সরবরাহ করতে পারে নয়াদিল্লি।
মলদ্বীপের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, ১৫ মার্চের মধ্যে সে দেশ থেকে ভারতকে সেনা সরাতে বলেছে মুইজ্জু সরকার। প্রসঙ্গত, ভোটের আগে মুইজ্জু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে মলদ্বীপ থেকে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে বলবেন। প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পর সেই কাজটাই করেন তিনি। এখন মলদ্বীপে ৭০ জন জওয়ান, সমু্দ্রে টহলের জন্য ডর্নিয়ের ২২৮ বিমান, দু’টি এইচএএল হেলিকপ্টার রয়েছে। সে দেশের সমুদ্রে টহলের পাশাপাশি অসুস্থ নাগরিকদের এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে আকাশপথে পৌঁছে দেয় ভারতীয় সেনা। প্রয়োজনে ত্রাণ-সহ মানবিক সাহায্য করে।
কেন্দ্রের ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের অন্তর্বর্তী বাজেটে মলদ্বীপে বরাদ্দ কমানো নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। সেই নিয়েও মুখ খুলেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জায়সওয়াল। তিনি জানিয়েছেন, কোনও সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে মলদ্বীপে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। কেউ জানিয়েছে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে এক রকম বরাদ্দ করা হয়েছিল। পরে তা পুনর্বিবেচনা করে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলছে। ওই পুনর্বিবেচনার সময় নতুন প্রস্তাবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রের কথায়, ‘‘মলদ্বীপে এ বার বরাদ্দ ৭৭৯ কোটি, যা আগে ছিল ৬০০ কোটি টাকা। কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তার উপর ভিত্তি করে নতুন বরাদ্দও খতিয়ে দেখা হবে। মলদ্বীপের উন্নয়নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সঙ্গী থাকব।’’