গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বেই সংসদেই দুই কক্ষে ‘অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক (সংশোধনী) বিল’ পাশ করিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সই মেলার পরে শনিবার শতাব্দীপ্রাচীন অভিবাসন আইনের পরিবর্তন কার্যকর করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল কেন্দ্র।
সংশোধিত অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক আইনে ‘অনুপ্রবেশ রোখার নামে দমনপীড়ন’ এবং ‘সরকারের সমালোচনা বন্ধ করার’ বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। অন্য দিকে কেন্দ্রের দাবি, অভিবাসন নীতির সরলীকরণ, জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী করা ও অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যেই ওই নতুন আইন চালু করা হচ্ছে। সংসদেও বিলটিকে ‘সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী’ বলে অভিযোগ করে বিরোধিতায় শামিল হয়েছিল কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ ‘ইন্ডিয়া’-র সহযোগী দলগুলি।
নতুন আইন অনুযায়ী কোনও বিদেশি নাগরিক বা অনাবাসী ভারতীয়ের যদি সরকারের সমালোচনা করার ইতিহাস থাকে, সে ক্ষেত্রে তাঁর এ দেশে প্রবেশ নিশ্চিত ভাবে বন্ধ করতেই ওই আইন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিশেষ ভাবে নিশানা করা হতে পারে বলে কয়েকটি মানবাধিকার গোষ্ঠীর দাবি। নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনও বিদেশি বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত হলে তাঁর এ দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে পারে অভিবাসন দফতর। ওই বিদেশিকে ফেরানোর দায় থাকবে না ভারতের। তিনি যে ভাবে বা যে সংস্থার মাধ্যমে (বিমান, জাহাজ, সড়ক-রেল) ভারতে এসেছিলেন, ফেরানোর দায় তাদেরই।
নতুন বিলে বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও বাড়ির মালিকদের তাঁদের সংস্পর্শে আসা বিদেশিদের সবিস্তার তথ্য প্রশাসনকে নিয়মিত দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। বৈধ পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া ভারতে ধরা পড়লে পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি জরিমানা ও পাঁচ বছর জেলের সুপারিশ করা হয়েছে। ভুয়ো পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে ধরা পড়লে ১ থেকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং দুই থেকে সাত বছরের জেলের সুপারিশ করা হয়েছে। সন্দেহভাজনকে পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতারের অধিকারও দেওয়া হয়েছে অভিবাসন অফিসারকে। এত দিন দেশে ‘বিদেশি নাগরিক আইন ১৯৪৬’, ‘অভিবাসন (পরিবহণ সংস্থার দায়বদ্ধতা) আইন ২০০০’, ‘পাসপোর্ট আইন ১৯২০’ এবং ‘রেজিস্ট্রেশন অফ ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৩৯’ চালু ছিল। সেই চারটি আইন মিলিয়েই তৈরি হয়েছে ‘সংশোধিত অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক আইন’।