পুরোহিত রাহুল শর্মা। ছবি: সংগৃহীত।
একের পর এক বাড়ির দরজা ঘুরেও যখন কেউ এগিয়ে আসেননি, বডনগরের একটি আশ্রমের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ধর্ষিতা কিশোরী। সোমবার সকাল তখন সাড়ে ৯টা। কিছু কাজের জন্য আশ্রম থেকে বেরোচ্ছিলেন পুরোহিত রাহুল শর্মা। আশ্রমের গেট খুলেই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। গেটের সামনে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে এক কিশোরী। শরীর রক্তে ভেজা। চোখ ফোলা।
এক কিশোরীকে ওই অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তার শরীর ঢাকতে নিজের জামাটা খুলে দিয়েছিলেন রাহুল। বুঝে উঠতে পারছিলেন না, এই কিশোরী কে, তার এমন অবস্থা কে করল! রাহুল বলেন, “কিশোরীর শরীর রক্তে ভেজা ছিল। অর্ধনগ্ন। কথা বলতে পারছিল না। চোখমুখ ফোলা। বিন্দুমাত্র দেরি না করে ১০০ ডায়ালে ফোন করলাম। কিন্তু সেখান থেকে কোনও জবাব না পেয়ে মহাকাল থানায় ফোন করে গোটা ঘটনাটি জানালাম। ২০ মিনিট পর আশ্রমে পুলিশ এল। তার পর কিশোরীকে নিয়ে গেল।”
সোমবার মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতে বছর পনেরোর ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক অটোচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে তিন জনকে। যদিও আটকদের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজও সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তাদের দাবি, সেই ফুটেজে দেখা গিয়েছে কিশোরী একটি অটোতে উঠেছিল। সেই অটোটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অটোতে রক্তের দাগও মিলেছে। রক্তে ভেজা শরীর, এক কিশোরী অর্ধনগ্ন অবস্থায় দুয়ারে দুয়ারে সাহায্যের জন্য ঘুরছে। এক ব্যক্তি তাকে আবার দুর দুর করে তাড়িয়েও দিলেন। সেই ঘটনার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। শেষমেশ কিশোরীকে সাহায্য করতে আশ্রম পুরোহিত রাহুল এগিয়ে এসেছিলেন।
রাহুল জানিয়েছেন, কিশোরীর কাছে তার নাম, ঠিকানা এবং পরিবারের কথা জানতে চাওয়া হচ্ছিল বার বার। কিন্তু তার কথা কিছু বোঝা যাচ্ছিল না। তাঁর কথায়, “আমরা কিশোরীকে আশ্বস্ত করেছিলাম যে, সে এখন নিরাপদ। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তার পরই তার কাছে নাম, ঠিকানা জানতে চেয়েছিলাম। বলতে পারেনি। খুবই আতঙ্কে ছিল মেয়েটি।” রাহুল আরও জানান, পুলিশ না আসা পর্যন্ত কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিল না কিশোরী। কেউ এগিয়ে এলেই তাঁর পিছনে গিয়ে লুকোচ্ছিল। এর পরই পুলিশ এসে কিশোরীকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।