Assam Citizenship Act

সাম্যের অধিকার লঙ্ঘন অসম নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারায়? বৈধতা যাচাই শুরু সুপ্রিম কোর্টে

অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত ওই ধারা ‘অসাংবিধানিক’ বলে দাবি করে শীর্ষ আদালতে মোট ১৭টি আবেদন জমা পড়েছিল। সেগুলি একত্র করে পাঁচ বিচারপতি সংবিধান বেঞ্চে শুরু হয়েছে শুনানি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:০৯

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অসম নাগরিকত্ব আইনের ৬-এ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা যাচাই করতে শুনানি শুরু করল সুপ্রিম কোর্ট। অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত ওই ধারা ‘অসাংবিধানিক’ বলে দাবি করে শীর্ষ আদালতে মোট ১৭টি আবেদন জমা পড়েছিল। সেগুলি একত্র করে মঙ্গলবার থেকে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সংবিধান বেঞ্চে শুরু হয়েছে শুনানি।

Advertisement

আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ অসমের নাগরিকত্ব আইন ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করছে। ওই ধারা অনুযায়ী, অসমে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসাবে চিহ্নিত ব্যক্তিকেই প্রমাণ করতে হয় তিনি ভারতীয় নাগরিক। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সাম্যের অধিকার রয়েছে। যে কেউ, তিনি দেশি, বিদেশি এমনকি অনাগরিক হন কিন্তু ভারতে বাস করেন, তিনিও সংবিধানে বর্ণিত ওই সাম্যের অধিকার ভোগ করবেন।

প্রসঙ্গত, অসম চুক্তিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য নাগরিকত্ব আইন (১৯৫৫) সংশোধন করে ১৯৮৫ সালে ৬-এ ধারা সংযোজিত করা হয়েছিল। ওই ধারায় নাগরিকত্বের প্রশ্নে অসমের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা বলবত্ করা হয়। বিদেশি বিতাড়নের নামে প্রকৃত ভারতীয়দের যাতে হেনস্থার মুখে পড়তে না হয় সে জন্য ১৯৮৩-তে বাঙালি সংগঠনগুলির দাবিতে ‘ইললিগ্যাল মাইগ্র্যান্টস’ (ডিটারমিনেশন বাই ট্রাইবুন্যাল) বা সংক্ষেপে আইএমডিটি অ্যাক্ট প্রণয়ন করা হয়। সেই আইনে বৈধ নাগরিকদের জন্য রক্ষাকবচ ছিল। কাউকে বিদেশি হিসেবে আদালতে অভিযুক্ত করলে অভিযোগকারীর দায় ছিল, তাঁর অভিযোগ প্রমাণ করার।

কিন্তু এই আইনটি বহাল থাকার ফলে বিদেশি চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াটি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল, এই অভিযোগে তখনকার আসু-নেতা (বর্তমানে বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) সর্বানন্দ সোনোয়াল সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। ২০০৫-এ শীর্ষ আদালত আইএমডিটি আইনকে বৈষম্যমূলক ও অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দিয়েছিল। ফলে অসমে তখন থেকেই ১৯৪৬-এর বিদেশি (বহিষ্কার) আইন অনুসরণ করে ৬-এ ধারায় ‘বিদেশি চিহ্নিতকরণ এবং বিতাড়ন’পর্ব চলছে।

অসম নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারির পর এবং ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের আগে যাঁরা নির্দিষ্ট এলাকা (যেমন বাংলাদেশ) থেকে অসমে এসেছেন এবং থেকে গিয়েছেন, ১৯৮৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের আওতায় তাঁরা সকলেই অসমের নাগরিক হিসাবে পরিগণিত হবেন। কিন্তু নিজের বারো পূর্বপুরুষের অসমবাসের সেই নথি না থাকলে তাঁরা সংশোধিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-তে ঠাঁই পাবেন না।

আরও পড়ুন
Advertisement