বাঁ দিক থেকে, ইয়েদুরাপ্পা, জেপি নড্ডা এবং জগদীশ শেট্টার। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
বছর ঘোরার আগেই কংগ্রেস ছেড়ে নিজের পুরনো দল বিজেপিতে ফিরলেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুতে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার উপস্থিতিতে পদ্মশিবিরে যোগ দেন তিনি।
কন্নড় রাজনীতিতে প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত জনগোষ্ঠীর নেতা শেট্টার বলেন, ‘‘আমি আবার নরেন্দ্র মোদীজির নেতৃত্বে কাজ করার জন্য উন্মুখ। উনি জাতির জন্য অনেক কিছু করছেন। তাই বিজেপিতে ফিরে এলাম।’’ প্রসঙ্গত, গত বছর এপ্রিলে কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে গিয়েছিলেন শেট্টার। হুবলি-ধারওয়াড় কেন্দ্রের ছ’বারের বিধায়ককে নরেন্দ্র মোদীর দল টিকিট না দেওয়াতেই দল ছেড়েছিলেন তিনি।
তবে কংগ্রেস তাঁকে টিকিট দিলেও হুবলি-ধারওয়াড়ে বিজেপির কাছে পরাজিত হন শেট্টার। জল্পনা ছিল, হেরে গেলেও তাঁকে বিধান পরিষদ থেকে জিতিয়ে এনে মন্ত্রী করা হতে পারে। কিন্তু তা হয়নি। সম্প্রতি কংগ্রেসের একটি সূত্রে শোনা গিয়েছিল, লোকসভা ভোটে হুবলিতে কর্নাটক থেকে মোদী সরকারের একমাত্র ক্যাবিনেট মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর বিরুদ্ধে প্রার্থী করা হতে পারে শেট্টারকে। কারণ, বিধানসভা ভোটে শেট্টার হেরে গেলেও উত্তর ও মধ্য কর্নাটকে বিজেপির লিঙ্গায়েত ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরেছে ফলে তার স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল।
শেট্টারের কাকা সদাশিব ১৯৬৭ সালের হুবলি কেন্দ্র থেকে জনসঙ্ঘের প্রার্থী হিসাবে জিতেছিলেন। তাঁর বাবা এসএস শেট্টার ছিলেন, ওই শহরের মেয়র। দক্ষিণ ভারতের প্রথম জনসঙ্ঘের নেতা হিসাবে মেয়র হয়েছিলেন তিনি। কর্নাটকের বিজেপি রাজনীতিতে শেট্টারের পরিচতি ছিল ‘ইয়েদুরাপ্পা বিরোধী’ হিসাবে। কিন্তু বৃহস্পতিবার ইয়েদুরাপ্পা বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে শেট্টার যোগ দেওয়ায় আমাদের শক্তিবৃদ্ধি হল।’’
২০১১ সালে দুর্নীতি মামলার জেরে ইয়েদুরাপ্পা মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। সে সময় মুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ সদানন্দ গৌড়াকে। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই দু’জনের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। এর পর বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী করেন ‘ইয়েদুরাপ্পা বিরোধী’ জগদীশকে। প্রতিবাদে বিজেপি ছেড়ে কর্নাটক জনতা পার্টি গড়ে ২০১৩ সালের বিধানসভা ভোটে লড়েন ইয়েদুরাপ্পা। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশের নেতৃত্বে লড়ে কর্নাটকে হারের মুখ দেখতে হয়েছিল বিজেপিকে। কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে শেট্টারকে ফেরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন বিজেপি কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরের নেতারা। এই ঘটনাই প্রমাণ করছে, কর্নাটক রাজনীতিতে ওরা কতটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।’’