শনিবার বিকেলে প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় আগুন লাগে। পুড়ে যায় গীতা প্রেসের তাঁবু এবং আশপাশের আরও কয়েকটা। ছবি: পিটিআই।
লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় করেছেন প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী নদীর সঙ্গমে পুণ্যস্নান করার জন্য। তার মধ্যেই রবিবার বিকেলে অঘটন ঘটে যায় কুম্ভমেলায়। দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। প্রশাসনের তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও প্রশ্ন রয়ে গেল পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে। দুর্ঘটনায় কেউ আহত না হলেও, পুড়ে গিয়েছে সারি সারি তাঁবু। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কি পর্যাপ্ত ছিল না? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আগুন লাগার সময় নিয়েও প্রয়াগরাজের জেলাশাসক এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য উঠে এসেছে।
কী ভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইতিমধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে যোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। রবিবার বিকেলে আগুনের উৎস ছিল গীতা প্রেসের তাঁবু। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সরকারি ভাবে এ কথা জানানো হয়েছে। গীতা প্রেসের এই তাঁবুটি রয়েছে কুম্ভমেলা প্রাঙ্গণের ১৯ নম্বর সেক্টরে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি ভানু ভাস্কর জানান, বিকেল ৪টে ৮ মিনিটে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। তিন মিনিটের মধ্যে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান পুলিশকর্মীরা। দমকল, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলও সেখানে পৌঁছয়। দ্রুত পুণ্যার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেল ৪টে ৩০ মিনিটে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। আপাতত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কষতে শুরু করেছে প্রশাসন।
গীতা প্রেস থেকেই যে আগুন ছড়িয়েছে, সে কথা পুলিশ এবং জেলাশাসক উভয়েই মেনে নিয়েছেন। তবে কখন আগুন লেগেছিল, সে বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে জেলাশাসকের বক্তব্যের ফারাক দেখা গিয়েছে। প্রয়াগরাজের জেলাশাসক রবীন্দ্র কুমার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আগুন লাগে। এ দিকে এডিজির বক্তব্য, আগুন লেগেছিল বিকেল ৪টে ৮ মিনিটে।
আগুন লাগার ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়, যোগী পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক আধিকারিকদের একটি দলও ঘটনাস্থলে পাঠানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে এ কথা জানানোর কিছু সময় পরেই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান যোগী স্বয়ং। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি।
প্রয়াগরাজে পূর্ণকুম্ভের সমাজমাধ্যম হ্যান্ডল ‘মহাকুম্ভ ২০২৫’ থেকে একটি পোস্ট করে অগ্নিকাণ্ডের কথা জানানো হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। মহাকুম্ভে অগ্নিকাণ্ড সকলকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। (পুণ্যার্থীদের) উদ্ধার এবং ত্রাণের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করছে প্রশাসন। আমরা মা গঙ্গার কাছে সকলের সুরক্ষা প্রার্থনা করছি।”