বাঁ দিকে আজমল কসাব, ডান দিকে ইয়াসিন মালিক। —ফাইল ছবি।
মুম্বইয়ে ২৬/১১-র সন্ত্রাসবাদী হামলায় জড়িত জঙ্গি আজমল কসাব যদি ন্যায়বিচারের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পেতে পারে তবে ইয়াসিন মালিক কেন পাবেন না। বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জম্মু কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএলএফ)-এর নেতা ইয়াসিনকে দু’টি মামলার শুনানিতে জম্মুর আদালতে হাজির করাতে সিবিআইয়ের আপত্তি সম্পর্কে বৃহস্পতিবার এই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট।
ইয়াসিনকে ইউএপিএ-র বিভিন্ন ধারায় ২০২২ সালের ২৪ মে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সন্ত্রাসে আর্থিক মদত এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন তিনি। আপাতত তিনি দিল্লির তিহাড় জেলে সাজাপ্রাপ্ত বন্দি। এরই মধ্যে ১৯৮৯ সালে সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সঈদের কন্যা রুবাইয়াকে অপহরণ এবং ১৯৯০ সালে শ্রীনগরের উপকণ্ঠে ভারতীয় বায়ুসেনার চার জওয়ানকে খুনের মামলায় অভিযুক্ত ইয়াসিনকে বিচারের শুনানিতে হাজির থাকার জন্য নোটিস পাঠিয়েছে জম্মুর আদালত।
সিবিআই জম্মুর আদালতে ইয়াসিনের ব্যক্তিগত হাজিরা নিয়ে আপত্তি তোলায় শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। সেই আবেদনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এএস ওকা এবং বিচারপতি এজি মসিহের বেঞ্চকে সিবিআইয়ের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘আমরা ইয়াসিনকে জম্মুর আদালতে হাজির করাতে চাই না।’’ ইয়াসিনের উপস্থিতিতে আদালতের নিরাপত্তা ব্যাহত হতে পারে এবং সাক্ষীদের উপর তার প্রভাব পড়তে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানির কথা বলেন মেহতা।
কিন্তু সেই যুক্তি কার্যত খারিজ করে দিয়ে বেঞ্চ পাল্টা প্রশ্ন করে, ‘‘বিচারপর্বের সময় অভিযুক্ত এবং সাক্ষীদের জেরা কী ভাবে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে করা সম্ভব?’’ জম্মু ও কাশ্মীরের ইন্টারনেট পরিষেবা যে স্থিতিশীল নয়, সে কথাও জানায় শীর্ষ আদালত। মেহতা তখন জানান, ইয়াসিনকে ব্যক্তিগত হাজিরার সুযোগ করে দিতে প্রয়োজনে বিচারপ্রক্রিয়া দিল্লিতে সরানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল ইয়াসিনের সংগঠন জেকেএলএফকে। চলতি বছর মার্চ মাসে সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই আরও পাঁচ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে মোদী সরকার। অক্টোবরে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ইউএপিএ ট্রাইবুনাল এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে আবেদন জানিয়ে ইয়াসিন হলফনামায় বলেছিলেন, “অস্ত্র ছেড়ে দিয়েছি। আমি এখন গান্ধীবাদী।”