Employment

চিঠি বিলির কাজ, সাইকেল চালানোর পরীক্ষা দিতে কেরলে হুড়োহুড়ি স্নাতক এবং ইঞ্জিনিয়ারদের

নিরাপত্তার কারণে সরকারি চাকরির দিকে ঝোঁক প্রচুর যুবক-যুবতীর। কিন্তু যে কাজের জন্য সপ্তম শ্রেণি পাশ করা লোকজনকে নেওয়া হচ্ছে, সেখানেও কেন উচ্চশিক্ষিতদের ভিড়?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কোচি (কেরল) শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ১১:০১
সাইকেল চালানোর পরীক্ষায় চাকরিপ্রার্থীরা।

সাইকেল চালানোর পরীক্ষায় চাকরিপ্রার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত।

সপ্তম শ্রেণি পাশ করার শংসাপত্র থাকলেই পরীক্ষা দিতে পারবেন। কাজ পিয়নের। তার আগে দিতে হচ্ছে সাইকেল চালানোর পরীক্ষা। সেই কাজের জন্য সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পেরোনো যুবকেরা। বাদ গেলেন না বিটেক পাশ করা চাকরিপ্রার্থীরাও। কে সাইকেল চালাতে ‘তুখোড়’, সেই পরীক্ষা দিলেন। ঘটনাটি কেরলের এর্নাকুলামের।

Advertisement

পেশাগত জীবনে নিরাপত্তার কারণে সরকারি চাকরির দিকে ঝোঁক প্রচুর যুবক-যুবতীর। কিন্তু যে কাজের জন্য সপ্তম শ্রেণি পাশ করা লোকজনকে নেওয়া হচ্ছে, সেখানেও কেন উচ্চশিক্ষিতদের ভিড়? সাইকেল চালানোর পরীক্ষা দিতে আসা চাকরিপ্রার্থীদের জবাব, ‘‘নিশ্চয়তা তো বটেই। বেতনটাও মোটের উপর ভালই।’’ তাঁদের দাবি, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে রাতদিন খেটে ১২-১৫ হাজার টাকার চাকরির চেয়ে পিয়নের চাকরি ঢের ভাল। মাস ফুরোলে ভাল টাকা মাইনে আছে। তার পর অন্য কোনও ‘ঝুঁকি’ নেই। ১০টা-৫টার কর্তব্য পালন করলেই কাজ শেষ। খাবার ডেলিভারির জন্য যে সব সংস্থা কর্মী নিয়োগ করে, তাদের থেকেও এখানে মাইনেকড়ি ভাল।

একাধিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, কেরলে পিয়নের ওই চাকরিতে বেতন ২৩ হাজার টাকার আশপাশে। তাই শুক্রবার প্রথম দিনেই ১০১ জন চাকরিপ্রার্থী হাজির হয়েছিলেন নির্ধারিত স্থানে। সাইকেল চালানোর পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তাঁরা। আপাতত ওই পরীক্ষা চলবে। তার পর তালিকা বেরোবে। সেখানে পারফরমেন্স অনুযায়ী র‌্যাঙ্ক থাকবে চাকরিপ্রার্থীদের। বাড়ি বাড়ি চিঠি বিলির কাজের জন্য ‘উৎসাহ’ কেন? প্রশ্ন শুনে এক বিটেক পাশ যুবক বলছেন, ‘‘অল্প মাইনেতে আইটি সেক্টরে কাজ করার চেয়ে পিয়নের কাজ ঢের ভাল।’’ আর এক চাকরিপ্রার্থীর কথায়, ‘‘যদি বিদ্যুৎ দফতরের সবচেয়ে নিচু পোস্টে কাজ পাই, তা-ও ৩০ হাজার টাকার আশপাশে বেতন পাব।’’ ওই লাইনেই ছিলেন কে প্রশান্ত। বাণিজ্য বিভাগের ওই পড়ুয়া ব্যাঙ্কিং পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। আপাতত একটা ক্যাফে খুলেছেন। ব্যবসা কি ভাল চলছে না? প্রশান্তের জবাব, ‘‘সরকারি চাকরি হলে নিরাপত্তা থাকবে। তাই এত খাটছি।’’

শ্রম ও কর্মসংস্থানের মন্ত্রকের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে কেরলে সবচেয়ে বেশি চাকরিপ্রার্থী এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। আরও একটি তথ্য হল, সংশ্লিষ্ট বছরে ৫.১ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে মহিলার সংখ্যা ৩.২ লক্ষ। যা দেশের মধ্যেও সর্বাধিক। তাই সপ্তম শ্রেণি পাশ করলে যে চাকরির জন্য আবেদন করা যায়, সেই কাজের প্রত্যাশায় সাইকেল চালানোর পরীক্ষা দিচ্ছেন শয়ে শয়ে যুবক।

আরও পড়ুন
Advertisement