Pahalgam Terror Attack

সেনা সর্বাধিনায়কের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ! পাকিস্তান সম্পর্কিত রণকৌশল নিয়েই আলোচনা হল দু’জনের

পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। টানা তিন দিন কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাক সেনা। জবাব দিয়েছে ভারতও।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৩৯
কাশ্মীর উপত্যকায় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান এবং (ইনসেটে) প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

কাশ্মীর উপত্যকায় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ান এবং (ইনসেটে) প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। —ফাইল চিত্র।

দেশের সেনা সর্বাধিনায়ক (চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বা সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। রবিবার বিকেলে রাজনাথের দিল্লির বাসভবনে পৌঁছে যান সেনা সর্বাধিনায়ক। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় তাঁদের। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, পহেলগাঁওয়ে নৃশংস হত্যালীলার পরে পাকিস্তানকে জবাব দিতে কী কী গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে দু’জনের। তবে ওই আলোচনার কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি। ঘটনাচক্রে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার আবহে গত তিন দিন ধরে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গুলিবর্ষণ শুরু করেছে পাক সেনা। পাকিস্তানের এক মন্ত্রী আবার ১৩০টি পারমানবিক অস্ত্র ভারতের দিকে তাক করা রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সেনা সর্বাধিনায়কের সঙ্গে রাজনাথের বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

পহেলগাঁও কাণ্ডে প্রথমে দায়স্বীকার করেছিল পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফোর্স (টিআরএফ)। যদিও পরে বয়ান বদলে নিজেদের দাবি থেকে সরে আসে টিআরএফ। একটি গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, হামলাকারীদের মধ্যে শুধু দু’জন স্থানীয় জঙ্গি ছিল। বাকি সকলেই পাকিস্তানি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান। এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভারত এবং পাকিস্তান উভয়েই একে অন্যের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ করেছে। তার মধ্যে অন্যতম, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধুচুক্তি স্থগিত করে দেওয়া। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, জলপ্রবাহ আটকানোর চেষ্টা হলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসাবে দেখা হবে। পাকিস্তান জানিয়েছে, তাদের শিমলা চুক্তি স্থগিত করার অধিকার রয়েছে।

বস্তুত, এই চুক্তির মাধ্যমেই কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারিত হয়েছিল। চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতির সময়ে যে দেশের বাহিনী যেখানে অবস্থান করছে, সেখানেই অবস্থান করবে। কোনও দেশই একতরফা ভাবে নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করবে না। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, জম্মু ও কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতির ফলে যে নিয়ন্ত্রণরেখা নির্ধারিত হয়েছে, ভারত এবং পাকিস্তান, উভয় পক্ষই তা মেনে চলবে। পারস্পরিক মতপার্থক্য সত্ত্বেও কোনও পক্ষ একতরফা ভাবে এর পরিবর্তন চাইবে না। এই রেখা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে হুমকি বা বলপ্রয়োগ থেকে উভয় পক্ষ বিরত থাকবে। কিন্তু, অতীতেও মাঝে মধ্যেই কোনও প্ররোচনা ছাড়াই নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাক ফৌজ। সম্প্রতি দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির পরে গত তিন দিন ধরে টানা সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে আসছে পাক সেনা। পাল্টা জবাব দিয়েছে ভারতও।

দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের এই কূটনৈতিক আঘাত এবং প্রত্যাঘাতের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে অন্য দেশগুলিও। পহেলগাঁও কাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ দ্বন্দ্বে মধ্যস্থতার কোনও আকাঙ্ক্ষা নেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তান নিজেরাই কোনও না কোনও ভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে।’’ মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ড এবং আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই-এর প্রধান কাশ পটেলও ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রবিবার ব্রিটেনের বিদেশসচিব ডেভিড ল্যামির সঙ্গে কথা হয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। পহেলগাওঁয়ের জঙ্গিহানা এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁদের।

Advertisement
আরও পড়ুন