ছেলের নামকরণ নিয়ে ঝগড়া করে ডিভোর্সের মামলা করলেন দম্পতি। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
পরিবারে নতুন সদস্য এলে তার নামকরণ নিয়ে শুরু হয় জোর আলোচনা। দাদু-ঠাকুমা এক নাম পছন্দ করেন, সেটা আবার মায়ের পছন্দ হয় না। আবার মায়ের দেওয়া নাম পছন্দ হয় না বাবার। কিন্তু সন্তানের নাম দেওয়া নিয়ে ঝগড়ার করে একেবারে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করলেন এক দম্পতি। ডিভোর্সের কারণ শুনতে গিয়ে বিস্মিত হলেন বিচারকও। কর্নাটকের মাইসুরুর ঘটনা।
বিয়ের পর বছরখানেক বেশ ভালই কেটেছিল মাইসুরুর এক দম্পতির। কিন্তু দাম্পত্য কলহের শুরু তাঁদের প্রথম সন্তান জন্মের পর। ২০২১ সালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন ২১ বছরের অদিতি (নাম পরিবর্তিত)। স্বাভাবিক ভাবে পরিবারে খুশির মেজাজ। কিন্তু বাচ্চার নাম কী হবে, সেই নিয়ে অদিতির মন কষাকষি শুরু হয় স্বামী বিবেকের (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে। প্রথমে পরিবারের সকলে বিষয়টি হালকা ভাবেই নিয়েছিলেন। কিন্তু ২৬ বছরের বিবেক যখন ছেলের নামকরণ অনুষ্ঠানই ‘বয়কট’ করলেন, ঝগড়া সেখান থেকে একেবারে অন্য আকার নিল। সন্তানের জন্য অনুষ্ঠান, তাতে কি না বাবা উপস্থিত থাকবেন না? অভিমান করে ছেলেকে নিয়ে প্রথমে বাপের বাড়ি চলে যান অদিতি। তার কিছু দিন পরেই ডিভোর্সের চিঠি হাতে পান বিবেক। শুরু হয় বিবাহবিচ্ছেদের মামলা।
আদালতে বিবেক জানিয়েছেন, স্ত্রী ছেলের নাম রেখেছেন আদি। সে নাম তাঁর একেবারেই পছন্দ নয়। তিনি যে একটা নাম ভেবেছেন, সেটা শুনতেও চাননি স্ত্রী। তাই বিচ্ছেদ চেয়েছেন। অন্য দিকে, ডিভোর্সের মামলায় ভরণপোষণের খরচ চান অদিতি। তাতে আবার আপত্তি জানান বিবেক। ওই ভাবেই চলছিল শুনানির পর শুনানি। গত সপ্তাহে মামলাটি ওঠে মাইসুরুর নগর দায়রা আদালতে। বিবাহবিচ্ছেদের কারণ জানার পর বেশ কিছু ক্ষণ চুপ হয়ে যান বিচারক। তার পর বিচারক নিজেই বেশ কয়েকটি নাম বলেন। পরামর্শ দেন, শিশুটির নাম আদালতের পছন্দে হোক। কিন্তু তাতেও সায় দেননি দম্পতি। দীর্ঘ শুনানিতে শেষমেশ একটি নামে স্বামী-স্ত্রী উভয়ই একমত হয়েছেন। আদালত শিশুটি নাম দিয়েছে আর্যবর্ধন। বিবাহবিচ্ছেদের মামলা প্রত্যাহার করেছেন অদিতি। আদালতের পরামর্শ, সন্তানকে ভাল করে মানুষ করুন।
সন্তানের নাম নিয়ে মন কষাকষি তার পর আদালতে যাওয়ার ঘটনা অবশ্য আগেও ঘটেছে। গত বছরই এমনই একটি মামলা উঠেছিল কেরল হাই কোর্টে। সেখানে তিন বছরের শিশুর নাম নিয়ে ঝগড়া হওয়ায় বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়।