রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। — ফাইল চিত্র।
মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্যের পর নতুন উদ্যমে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে নিশানা করতে সক্রিয় হলেন বিরোধী নেতৃত্ব। সংসদে ‘ইন্ডিয়া’র ধারাবাহিক বিক্ষোভের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দ্বারস্থ হচ্ছেন তাঁরা। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে মঙ্গলবার মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধী জোটের তরফে রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে আবেদন করেন মঙ্গলবার। রাষ্ট্রপতি মুর্মু সেই আবেদন মেনে ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিদলকে বুধবার সাক্ষাতের জন্য সময় দিয়েছেন।
শনিবার দু’দিনের সফরে হিংসাদীর্ণ মণিপুরে গিয়েছিলেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ২১ জন সাংসদ। উত্তর-পূর্বাঞ্চেল ওই বিজেপি শাসিত রাজ্যের হিংসা কবলিত কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখেন লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। কথা বলেন হিংসায় ঘরছাড়া প্রতিনিধিদের সঙ্গে। রবিবার সকালে মণিপুরের রাজ্যপাল অনসূয়া উইকের সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে স্মারকলিপিও তুলে দেন বিরোধী সাংসদরা। শনি এবং রবিবার ছুটির পরে সংসদে নতুন করে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’।
ঘটনাচক্রে, সোমবার থেকেই মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ধারাবাহিক সমালোচনার মুখে পড়ছে কেন্দ্র। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেপি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ সোমবার সরকারপক্ষের আইনজীবীর বাংলায় হিংসার অভিযোগ সংক্রান্ত মন্তব্য খারিজ করে বলেছিল, ‘‘অন্য রাজ্যের ঘটনার সঙ্গে মণিপুরের পরিস্থিতি এক করে দেখা যায় না।’’ মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত বলেছে, গত তিন মাসের গোষ্ঠীহিংসার ঘটনাগুলি নিয়ে মণিপুর পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া ‘গয়ংগচ্ছ এবং ‘অলসতায় ভরা’।
শীর্ষ আদালতে সেই সঙ্গে বলেছে, ‘‘মণিপুর পুলিশ পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারিয়েছে।’’ গত তিন মাসের হিংসায় রাজ্য জুড়ে ৬,০০০-এর বেশি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। খুন হয়েছেন দেড়শোর বেশি মানুষ। ঘরছাড়ার সংখ্যা ৬০ হাজারের উপর। তবুও গ্রেফতারির সংখ্যা ‘অত্যন্ত কম’ হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। এ বিষয়ে জবাবদিহি করার জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হিংসাদীর্ণ ওই রাজ্যের পুলিশ মহানির্দেশক (ডিজি)-কে তলব করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, সোমবার দুপুর ২টোর মধ্যে সশরীরে হাজির হতে হবে মণিপুর পুলিশের ডিজিকে। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকারের উপর চাপ বাড়াতে বিরোধী শিবির রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হচ্ছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।’’