Congress

Congress: ‘রাহুল গাঁধীর সমস্যা’ নিয়ে মন্তব্য করে কংগ্রেসের তোপে পিকে, আপাতত বন্ধ দলের দরজা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়া সফরের প্রস্তুতির কাজে গিয়ে কিশোরের ‘রাহুল গাঁধীর সমস্যা’ নিয়ে করা মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল গতকালই।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২১ ০৭:১৭
রাহুল নিয়ে  প্রশান্তের মন্তব্যে অখুশি কংগ্রেস।

রাহুল নিয়ে প্রশান্তের মন্তব্যে অখুশি কংগ্রেস।

প্রশান্ত কিশোর নিজেকে কী ভূমিকায় দেখতে চান, আগে সেই বিষয়ে তাঁকে মনস্থির করতে বলল কংগ্রেস হাইকমান্ড।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়া সফরের প্রস্তুতির কাজে গিয়ে কিশোরের ‘রাহুল গাঁধীর সমস্যা’ নিয়ে করা মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল গতকালই। আজ, শুক্রবার সর্ব ভারতীয় কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে দলের মুখপাত্র পবন খেরা কিশোরকে নিশানা করে বলেন, ‘‘আগে আপনি নিজের মাথার মধ্যে স্পষ্ট করে নিন যে, আপনি কী। তার পরে দেশের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করুন যে, রাহুল গাঁধী শিখুক, মোদীজিও শিখুক।’’

Advertisement

গত কাল কিশোর বলেছিলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী ভাবেন, এক সময় মানুষ নিজে থেকেই নরেন্দ্র মোদীকে সরিয়ে দেবেন। সেটাই তাঁর সমস্যা। কারণ, বাস্তবে তা হবে না।’’ পাল্টা জবাবে খেরার কটাক্ষ, ‘‘সবাই আপনার কাছ থেকেই শিখবে, হাত জোড় করে গুরুদক্ষিণা দিতে থাকবে, এমনটা হয় না।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘এই সব উপদেষ্টাদের কোনও মতাদর্শ থাকে না। উপদেষ্টা, ভোটকুশলী, ট্রিকস্টার, রণকুশলী, অংশীদার— এঁরা কখনও টেবিলের এ দিকে, তো কখনও ও দিকে। এ ভাবে কাজ চলে না।’’

কিশোর বলেছিলেন, বিজেপি আগামী কয়েক দশক দেশের রাজনীতির কেন্দ্রে থাকবে। ওই দল সহজে কোথাও যাবে না বা জাতীয় রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়বে না। কংগ্রেস মুখপাত্রের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আমরা কি বলেছি যে বিজেপিমুক্ত ভারত দরকার? আমরা তো বিজেপির মতো করে ভাবি না।’’

কংগ্রেস আঙুল তুললেও, কিশোর এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। গোয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, ‘‘কিশোরকে এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা যেতে পারে। তিনিই উত্তর দিতে সক্ষম।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘উনি বোঝাতে চেয়েছেন, আমরা যদি ঠিক ভাবে কাজ না করি, তা হলে বিজেপি থেকে যাবে।’’

রাহুলকে নিয়ে মন্তব্যের পরেই লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা কিশোরকে পাল্টা নিশানা করেছিলেন। আজ একেবারে সর্ব ভারতীয় কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে দলের মুখপাত্র কিশোরকে তোপ দাগার পরে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, কিশোরের এই দলে আসার সম্ভাবনায় আপাতত তালা ঝুলে গেল।

গাঁধী পরিবারের সঙ্গে কিশোরের বৈঠকের পরে তাঁর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। কিন্তু কংগ্রেস নেতারা তখনই বলেছিলেন, কিশোর কার্যত কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নিজের মুঠোয় চাইছেন। কিন্তু তা হওয়ার নয়। তাঁদের মতে, নিজের পরিকল্পনা সফল না হওয়াতেই এখন কংগ্রেসকে নিশানা করছেন ভোটকুশলী।

কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, কিশোরের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু তাঁর হাতে দলকে বন্ধক রেখে গাঁধী পরিবার বলতে পারে না যে, এ বার যা করার পি কে-ই করুক। যেমন, নেতৃত্বের দায়িত্ব কাঁধে বলেই
রাহুল আগামিকাল থেকে গোয়া সফরের মাধ্যমে পাঁচ রাজ্যের ভোট প্রচারে নেমে পড়ছেন। প্রিয়ঙ্কা ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশে সক্রিয়। রাহুল সুরাতে আজ এক মানহানি মামলায় হাজিরা দিতে গুজরাতে গিয়েছিলেন বলে আগামিকাল
গোয়ায় পৌঁছচ্ছেন।

কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেন, পি কে যদি মনে করেন, তাঁর কংগ্রেসে কিছু করার রয়েছে, তা হলে তিনি কংগ্রেসে আসতে পারেন। কিন্তু আগে তাঁকে দলের সদস্য হতে হবে। তার পরে তাঁর জন্য উপযুক্ত দায়িত্ব ভাবা হবে। তাঁকে যে বিনা দায়িত্বে বসিয়ে রাখা যায় না, সেটা কংগ্রেস হাই কমান্ডও জানে। কিন্তু আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে তার পরে তাঁকে নিজের পরিকল্পনা জানাতে হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন