প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা। ছবি: সংগৃহীত।
কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজুর সামনেই দেশের বিচারবিভাগীয় পরিকাঠামো নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা। বিচার ব্যবস্থার পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে ‘জাতীয় বিচারবিভাগীয় পরিকাঠামো কর্তৃপক্ষ’ গঠনের বিষয়টি নিয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলার বিষয়েও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি।
মহারাষ্ট্রের অওরঙ্গাবাদে শনিবার একটি অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘স্বাধীন ভারতে বিচারবিভাগীয় পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টিকে কখনওই তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই তা কার্যকরও হয়নি।’’ তিনি জানান, দেশে মাত্র ৫ শতাংশ আদালতে প্রাথমিক চিকিৎসার পরিকাঠামো রয়েছে। ২৬ শতাংশ আদালতে মহিলাদের পৃথক শৌচাগার নেই। ১৬ শতাংশ আদালতে কোনও শৌচাগারই নেই! তাঁর অভিযোগ, ভারতের অর্ধেক আদালতেই কোনও পাঠাগারের ব্যবস্থা নেই, গুরুত্বপূর্ণ মামলা বিশ্লেষণের জন্য যা কার্যত অপরিহার্য। ৪৬ শতাংশ আদালতে নেই পরিশুদ্ধ পানীয় জলের কোনও বন্দোবস্ত।
বিচারবিভাগের আর্থিক পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টিতেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। তাঁর কথায়, ‘‘সময়মতো ন্যায়বিচার না দেওয়া গেলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে দেশের বার্ষিক মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) ৯ শতাংশ পর্যন্ত। আর সময়োচিত ন্যাচবিতারের লক্ষ্যপূরণের জন্য প্রয়োজন বিচার ব্যবস্থার পরিকাঠামো উন্নয়ন।’’ প্রধান বিচারপতি জানান বিচারবিভাগীয় পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য একটি প্রস্তাব কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রকের কাছে পাঠিয়েছেন তিনি।
বিচারবিভাগীয় পরিকাঠামো উন্নয়ননের প্রয়োজনীয়তার কথা স্বীকার রিজিজু জানান, বিষয়টিতে যথাসাধ্য গুরুত্ব দেবে কেন্দ্র। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। প্রসঙ্গত, ২০১৬-র এপ্রিলে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনেই অনুযোগ করেছিলেন প্রয়োজনীয় বিচারপতির অভাবে ন্যায়বিচারে বিলম্ব ঘটছে। আদালতগুলিতে ঝুলে রয়েছে বহু মামলা।