শিনকানসেন রেলের প্রযুক্তিতে ভারতে যে বুলেট ট্রেন চলবে তা মূলত ‘ই-৫’ শ্রেণির। —প্রতীকী চিত্র।
জাপানের প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতের মুম্বই-আমদাবাদ রুটে বুলেট ট্রেনের পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। তবে ভারতের আবহাওয়া এবং যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ওই ট্রেনের রেকে একাধিক বদল আনতে হচ্ছে বলে খবর। সম্প্রতি ওই প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ন্যাশনাল হাইস্পিড রেল কর্পোরেশনের কর্তারা এ নিয়ে জাপানের প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভারতের রেলের গবেষণা সংস্থা আরডিএসও-র (রিসার্চ,ডিজ়াইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন) তত্ত্বাবধানে জাপানে তৈরি হওয়া বুলেট ট্রেনের রেকে প্রয়োজনীয় বদল আনার কাজও করা হচ্ছে বলে খবর।
শিনকানসেন রেলের প্রযুক্তিতে ভারতে যে বুলেট ট্রেন চলবে তা মূলত ‘ই-৫’ শ্রেণির। অ্যালুমিনিয়ামের সংকর ব্যবহার করে তৈরি প্রায় ২৫৩ মিটার লম্বা এক-একটি রেকের আকার ‘এরোডায়নামিক’ বৈশিষ্ট্যযুক্ত। অর্থাৎ বাতাসের বাধা কাটানোর জন্য ট্রেনের সামনের দিক অনেকটা বিমানের মতো। এ ছাড়া, কামরার নীচের দিকে চাকা পর্যন্ত এবং ভেস্টিবিউলের জায়গা সম্পূর্ণ ঢাকা।
তবে ওই প্রযুক্তির ট্রেন মূলত জাপানের শীতল আবহাওয়ায় চলার উপযুক্ত। কিন্তু ভারতে ওই ট্রেন যে পথে চলবে সেখানে গ্রীষ্মে তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়ে ফেলে। তাই ভারতের বুলেট ট্রেনের ক্ষেত্রে ওই তাপমাত্রায় ছোটার উপযোগী করেই ট্রেন তৈরি করতে হচ্ছে। সেই অনুযায়ী বাতানুকূল ব্যবস্থা ছাড়াও অন্যান্য বদলও আনতে হচ্ছে। ভারতীয় যাত্রীদের মালপত্র সঙ্গে নিয়ে যাতায়াতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ট্রেনের কামরায় মালপত্র রাখার পরিসরও বাড়াতে হচ্ছে। ভারতে যে পথে ওই ট্রেন চলবে সেখানে ধুলোঝড়ের দাপটও আছে। রেলের খবর, তাপমাত্রার পাশাপাশি ধুলোঝড়ের কথা মাথায় রেখে ট্রেনের বাইরের রঙ,বাতানুকূল যন্ত্র এবং অন্য কিছু যন্ত্রেও একাধিক বদল
আনতে হচ্ছে।
রেলের কর্তারা জানান, প্রস্তাবিত বুলেট ট্রেনের পথে একাধিক নদীর উপত্যকা রয়েছে। ওই সব এলাকায় তীব্র গতিতে ঝড় বওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে ওই সব অংশে নিয়মিত বাতাসের গতি পরিমাপ করার জন্য সেন্সর ছাড়াও ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে ঝড়ের সময় স্বয়ংক্রিয় উপায়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করার প্রযুক্তিও বসানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই ৫০৮ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে গুজরাতের ৫০ শতাংশ পথের কাজ হয়ে গিয়েছে। ওই অংশে রেললাইন পাতার কাজ চলছে। বাকি অংশে দ্রুত শুরু হয়েছে। ২০২৭ সালের মধ্যে মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্প চালু করার লক্ষ্য রেখেছে রেল।