পাইলট সৃষ্টি তুলির দেহ উদ্ধার হয় গত বুধবার। ফাইল চিত্র।
তুচ্ছ বিষয়ে সৃষ্টির সঙ্গে অশান্তি করতেন তাঁর প্রেমিক আদিত্য। শুধু তা-ই নয়, অনেক সময় নিজের মতামতও সৃষ্টির উপরে জোর করে চাপিয়ে দিতেন তিনি। এয়ার ইন্ডিয়ার তরুণী পাইলট সৃষ্টি তুলির মৃত্যুর ঘটনায় এমনই অভিযোগ এনেছে তাঁর পরিবার। সৃষ্টির দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তাঁর মৃত্যু নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
প্রেমিক আদিত্য পণ্ডিতকে মুম্বই পুলিশ চার দিন আগেই গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার পর্যন্ত তাঁর পুলিশি হেফাজত ছিল। সেই হেফাজত সোমবার পর্যন্ত বেড়েছে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, কিছু একটা হয়েছে আন্দাজ করতে পেরেও কেন পুলিশকে ফোন করলেন না আদিত্য। কেন তিনি নিজেই তালা খোলানোর লোক নিয়ে এসে ফ্ল্যাটে ঢুকলেন? আর এখানেই সন্দেহ বাড়ছে তদন্তকারীদের।
সৃষ্টির পরিবারও বার বার দাবি করছে, তাঁদের কন্যা আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাঁকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। ফ্ল্যাট ছেড়ে আদিত্য বেরিয়ে যাওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে কী এমন ঘটল যার জন্য এত বড় সিদ্ধান্ত নিলেন সৃষ্টি? এই ১৫ মিনিটের রহস্যই এখন উন্মোচন করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সৃষ্টির মোবাইলে হোয়াট্সঅ্যাপ থেকে আদিত্যের সঙ্গে ঘটনার আগে কী কথোপকথন হয়েছিল তা উদ্ধার করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ঘটনাচক্রে, এই কথোপকথন মুছে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আদিত্যের বিরুদ্ধে। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘আদিত্যের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’
তবে আদিত্যের আইনজীবী অম্বুজা শুক্লের দাবি, তাঁর মক্কেলকে ফাঁসানো হচ্ছে। মুম্বই থেকে আড়াই ঘণ্টার দূরত্বে গাড়ি চালিয়ে চলে গিয়েছিলেন আদিত্য। তার পরেও সৃষ্টিকে বাঁচানোর জন্য আবার ফিরে এসেছিলেন মুম্বইয়ে। গাড়ি চালাতে চালাতেই ৯০ বার ফোন করেন সৃষ্টিকে। কিন্তু ধরেননি। তার পরই ভিডিয়ো কল আসে তাঁর কাছে। হুমকি দিয়ে সৃষ্টি বলেন তিনি আত্মহত্যা করতে চলেছেন। আদিত্যের আইনজীবীর আরও দাবি, যদি তাঁর মক্কেলের খারাপ উদ্দেশ্যই থাকত, তা হলে ফিরে এসে সৃষ্টিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন কেন।
গত বুধবার মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট থেকে পাইলট সৃষ্টির দেহ উদ্ধার হয়। আত্মহত্যা না কি পরিকল্পিত খুন, তার উত্তর খুঁজছে পুলিশ।