(বাঁ দিকে) নিহত নেতা বাবা সিদ্দিকি। ধৃতদের নিয়ে আসা হচ্ছে আদালতে (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
২০২৪ সালের এপ্রিল থেকেই এনসিপি (অজিত) নেতা তথা মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকিকে খুনের ছক কষেছিল বিশ্নোই গ্যাং! শুধু তা-ই নয়, মুম্বইয়ে আধিপত্যও কায়েম করতে চেয়েছিল লরেন্স বিশ্নোইয়ের গোষ্ঠী! এ বার বাবা সিদ্দিকি হত্যার চার্জশিটে উঠে এল এমনই সব তথ্য।
৪৫৯০ পৃষ্ঠার ওই চার্জশিটে বলা হয়েছে, গত বছরের এপ্রিল থেকেই বাবা সিদ্দিকিকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল লরেন্স গোষ্ঠী। নেতা খুনের পাশাপাশি মুম্বইয়ে আধিপত্য কায়েম করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। জেলবন্দি কুখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিশ্নোইয়ের ভাই আনমোল বিশ্নোই, সিদ্দিকি হত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত শুভম লোঙ্কার, জিশান আখতার-সহ মোট ২৬ জনের নাম রয়েছে ওই চার্জশিটে। রয়েছে তিন শুটার শিবকুমার যাদব, গুরমেল সিংহ ও ধরমরাজ কাশ্যপের নামও। কী ভাবে আনমোলের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল, তারও পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা রয়েছে সেখানে।
পুলিশের এক সিনিয়র আধিকারিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’কে জানিয়েছেন, এর আগেও এক বার বাবা সিদ্দিকিকে খুনের চেষ্টা করেছিল লরেন্সের গ্যাং। চার্জশিটে সেই ঘটনারও উল্লেখ রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে গণপতি উৎসবের সময় সিদ্দিকিকে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রচুর ভিড় ও কড়া নিরাপত্তার কারণে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। চার্জশিটে বলা হয়েছে, মুম্বইয়ে নেতা-খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিএনএসএস ১৮০ ধারার অধীনে মোট ১৮০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ১৮৩ ধারায় রেকর্ড হয়েছে, আরও ১৪ জনের বয়ান সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। এখনও পর্যন্ত ৩৫টি মোবাইল ফোন, পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র, ছ’টি ম্যাগাজ়িন এবং ৮৪ রাউন্ড গোলাবারুদ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। তবে তদন্তকারীরা এ-ও জানিয়েছেন যে, এখনও পর্যন্ত সিদ্দিকি খুনের ঘটনার সঙ্গে জেলবন্দি লরেন্সের কোনও যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গত ১২ নভেম্বর বান্দ্রায় ছেলে জিশানের দফতরের সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন সিদ্দিকি। ওই খুনের নেপথ্যে বিশ্নোই গ্যাংয়ের যোগ থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাঁরাই জানান, সিদ্দিকিকে খুন করতে দীর্ঘ দিন ধরে বড় ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। এই ঘটনায় অনেকে জড়িত ছিলেন। কাউকে অস্ত্র সংগ্রহ করতে, কাউকে আবার বাইকের ব্যবস্থা করতে, আবার কাউকে টাকা লেনদেনের জন্য খুনের পরিকল্পনায় জোড়া হয়েছিল। একে একে বহু সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে আনমোল এখনও অধরাই।