Jammu-Kashmir Terror Attack

‘যত ক্ষণ না মুখ থুবড়ে পড়ে গুলি কর’! পহেলগাঁওয়ে ডাক্তার স্ত্রীর চোখের সামনে ঝাঁঝরা ইঞ্জিনিয়ার

মঙ্গলবার দুপুরে মেয়ে সুজাতার ফোন পেয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের বৃদ্ধা। কিন্তু ফোনের অপর প্রান্তে মেয়ের গলা শুনে সারা শরীর কেঁপে ওঠে তাঁর। শিরদাঁড়া দিয়ে বয়ে যায় হিমস্রোত।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৫৬
Bengaluru Techie Bharat Bhushan shot dead in front of Wife and son in Jammu and Kashmir’s Pahalgam

জামাই ভরত ভূষণের খুনের কথা জানালেন বৃদ্ধা শাশুড়ি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

স্বামী ইঞ্জিনিয়ার। স্ত্রী চিকিৎসক। আদতে অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ওই দম্পতি থাকতেন বেঙ্গালুরুতে। সঙ্গে তিন বছরের পুত্র। জম্মু-কাশ্মীর বেড়াতে গিয়ে মঙ্গলবার পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় নিহত হয়েছেন সেই ইঞ্জিনিয়ার। স্ত্রী-পুত্রের চোখের সামনে তাঁকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দিয়ে যায় জঙ্গিরা। মেয়ের কাছে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শুনে কেঁপে ওঠেন বৃদ্ধা মা। জানালেন, কী নৃশংস হত্যালীলা চলেছে ভূস্বর্গে। কী ভাবে মারা হয়েছে তাঁর জামাইকে।

Advertisement

মেয়ে-জামাই এবং ছোট্ট নাতি কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন দিন কয়েক আগে। প্রতি দিন তাঁদের সঙ্গে ফোনে কথা হত বৃদ্ধার। কত গল্প! মঙ্গলবারও মেয়ে সুজাতার ফোন পেয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের বৃদ্ধা। কিন্তু ফোনের অপর প্রান্তে মেয়ের গলা শুনে সারা শরীর কেঁপে ওঠে তাঁর। শিরদাঁড়া দিয়ে হিমস্রোত বয়ে যায়। ‘‘কী বলছিস?’’ তাঁর ছোট্ট প্রশ্নের পর সুজাতার মুখে যা যা শুনলেন তা-ই জানালেন ওই বৃদ্ধা। তিনি বলেন, ‘‘জামাইয়ের নাম ভরত ভূষণ। ও ইঞ্জিনিয়ার। আমার মেয়ে সুজাতা ডাক্তার। মঙ্গলবার ওরা পহেলগাঁও গিয়েছিল।’’ খানিক থেমে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘জঙ্গিরা ওদের সামনে এসে কে হিন্দু, কে মুসলমান বাছাবাছি করছিল। হিন্দু হলেই গুলি চালায়। এক জঙ্গি তার সঙ্গীকে বলেছিল, ‘যত ক্ষণ না ওরা মুখ থুবড়ে পড়ে না যায়, তত ক্ষণ গুলি চালাবি।’ তার পর আমার মেয়ে, তিন বছরের নাতির সামনে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেল ভূষণ।’’ হাহাকার করে ওঠেন শাশুড়ি।

বৃদ্ধা জানান, মেয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয় মঙ্গলবার দুপুর ২টো ৪৫ মিনিটে। তখন সুজাতারা ছিলেন বৈসরন উপত্যকায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ে ডাক্তার। ও দেখে বুঝল, স্বামীকে আর বাঁচাতে পারবে না। কিছু ক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে যায় সেনা। তারা মেয়ে, নাতিকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যায়।’’

বেঙ্গালুরু দক্ষিণ লোকসভার বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য মঙ্গলবার রাতেই সুজাতার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি জানান, অনন্তনাগে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সুজাতাদের। অনন্তনাগের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তিনি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভরতের দেহ আনার চেষ্টা করছেন।

মঙ্গলবার কর্নাটকের শিবমোগ্গার মঞ্জুনাথ রাও স্ত্রী পল্লবীর চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। পল্লবীর দাবি, বেছে বেছে পুরুষদের মারা হচ্ছিল। মহিলা এবং শিশুদের ছেড়ে দেয় জঙ্গিরা। তাঁকে এক জঙ্গি বলে, ‘‘তোমাকে মারব না। যাও, মোদীকে (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) গিয়ে বলো।’’

Advertisement
আরও পড়ুন