অভিযুক্ত মা সূচনা শেঠ। —ফাইল চিত্র ।
চার বছরের শিশুপুত্রকে ‘খুন’ করার দিন কয়েক আগেই প্রাক্তন স্বামীকে ছেলের সঙ্গে দেখা করে নেওয়ার কথা বলেছিলেন সূচনা শেঠ। বেঙ্গালুরুর স্টার্টআপ সংস্থার সিইও-র সন্তানের হত্যার ঘটনার তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এল পুলিশের হাতে।
তদন্ত চলাকালীন পুলিশ জানতে পেরেছে যে, গত ৬ জানুয়ারি প্রাক্তন স্বামী বেঙ্কট রামনকে মেসেজ করেছিলেন সূচনা। বেঙ্কট চাইলে পরের দিন ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সূচনা ছেলেকে নিয়ে গোয়া চলে যাওয়ায় দেখা করতে পারেননি বেঙ্কট। এর পর ওই দিনই বেঙ্কট ইন্দোনেশিয়া চলে যান বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশের অনুমান, ছেলের সঙ্গে শেষ বার দেখা করার জন্যই প্রাক্তন স্বামীকে ডেকে পাঠান সূচনা। কিন্তু পরে মত বদলে দেন।
পুলিশের অনুমান, ২০১৯ সালে পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন সূচনা। ২০২০ সালে স্বামী বেঙ্কট রমনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয় তাঁর। সেই সম্পর্কের ফাটল দিনে দিনে আরও বেড়েছিল। তার শেষ পরিণতি হয় বিবাহবিচ্ছেদ। সূচনা এবং বেঙ্কট বিবাহবিচ্ছেদের পথ বেছে নেন। কিন্তু পুত্র কার কাছে থাকবে তা নিয়েও একটা প্রশ্ন তৈরি হয়। কিন্তু আদালত সন্তানকে মায়ের হেফাজতে রাখারই অনুমতি দিয়েছিল। তবে প্রতি সপ্তাহে রবিবার বাবাকে পুত্রের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেয় আদালত। পুলিশ সূত্রে খবর, পুত্রকে নিজের কাছে রাখলেও একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকতেন সূচনা। এই বুঝি পুত্রকে নিজের হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করবেন বেঙ্কট! সেই আতঙ্ক ক্রমশ গ্রাস করেছিল সূচনাকে। পুত্রকে যদি নিজের কাছে না রাখতে পারেন, তা হলে কারও হতে দেবেন না, প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, এই ধারণাই কাজ করেছিল সূচনার মধ্যে। আর সেই চিন্তাভাবনা থেকেই কি বেঙ্কটকে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে বলেও মত বদলান সূচনা? এখন সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
অন্য দিকে, সূচনা এবং বেঙ্কটের বিবাহবিচ্ছেদের নথি অনুযায়ী, সূচনা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা দায়ের করেছিলেন। সূচনার অভিযোগ ছিল, শিশুপুত্রকেও মারধর করতেন বেঙ্কট। যদিও বেঙ্কট আদালতে সেই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিবাহবিচ্ছেদের নথি থেকে এ-ও জানা গিয়েছে, বিয়ের পর প্রতি মাসে খরচ বাবদ স্বামীর থেকে আড়াই লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত মা সূচনা ‘দ্য মাইন্ডফুল এআই ল্যাব’ নামে বেঙ্গালুরুর এক স্টার্টআপের সিইও। লিঙ্কডইন প্রোফাইল অনুযায়ী, তিনি এক জন এআই নীতিশাস্ত্র বিশেষজ্ঞ এবং ডেটা সায়েন্টিস্ট। তাঁর বিরুদ্ধেই গত ৮ জানুয়ারি গোয়ার এক সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টে চার বছরের শিশুপুত্রকে খুনের অভিযোগ উঠেছে।