বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরের ‘ডিসপ্লে বোর্ড’। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
কোন বিমান কখন ছাড়বে? কোন টার্মিনালে যেতে হবে যাত্রীদের? এই সব তথ্য বিমানবন্দরের ‘ডিসপ্লে বোর্ডে’ থাকে। কিন্তু সেখানে শুধু দুই ভাষাতেই জ্বলজ্বল করছে সব তথ্য। ইংরেজি এবং কন্নড়! কোথাও কোনও হিন্দির চিহ্ন নেই। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরের ‘ডিসপ্লে বোর্ডে’র ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং দক্ষিণ ভারতের মধ্যে চলমান ভাষাযুদ্ধের আবহে বিমানবন্দরের ‘ডিসপ্লে বোর্ড’ থেকে হিন্দি ‘উধাও’ হয়ে যাওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত সপ্তাহে এক ব্যক্তি তাঁর এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। তিনি দাবি করেন, সেই ভিডিয়োটি বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডে’র। সেখানে দেখা যাচ্ছে বিমানের নাম, গন্তব্য, নম্বর, গেট নম্বর ইত্যাদি তথ্য। কিন্তু সব তথ্যই ইংরেজি এবং কন্নড়ে! সাধারণত, বিমানবন্দর হোক বা রেলস্টেশন এই সব তথ্য থাকে ইংরেজি, হিন্দি এবং আঞ্চলিক ভাষায়। কিন্তু বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর তার ব্যতিক্রম। ‘ডিসপ্লে বোর্ড’-এর তথ্যে হিন্দির ছোঁয়া নেই!
ভিডিয়োটি ভাইরাল হতেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিমিটেড (বিআইএএল)। তারা জানিয়েছে, বিমানের তথ্য প্রদর্শন ব্যবস্থায় কোনও বদল হয়নি। যাত্রীদের সহায়তার জন্য ‘ডিজিটাল বোর্ডে’ ইংরেজি এবং কন্নড় ভাষা ব্যবহার করা একটি প্রতিষ্ঠিত অনুশীলন মাত্র! বিআইএএল-এর এক কর্তার কথায়, ‘‘টার্মিনাল জুড়ে পথনির্দেশক বোর্ডগুলিতে ইংরেজি, কন্নড় এবং হিন্দিতেই সব তথ্য লেখা থাকে।’’ তবে সেই যুক্তিতেও বিতর্ক থামছে না। কেউ কেউ বিষয়টিকে ‘ইতিবাচক’ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করছেন, আবার কেউ কেউ মনে করেন, মেট্রো স্টেশন বা বাস টার্মিনালে হিন্দিতে লেখা না থাকলেও বিমানবন্দর বা রেলস্টেশনে তা আবশ্যক!
উল্লেখ্য, দক্ষিণের রাজ্যগুলি অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতিকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভাষাযুদ্ধ শুরু হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজ্যে রাজ্যে প্রথম ভাষা হিসাবে স্কুলপড়ুয়াদের বাধ্যতামূলক ভাবে শিখতে হবে মাতৃভাষা। দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে তাদের হিন্দি বা ইংরেজিকে বেছে নিতে হবে। এ ছাড়া তৃতীয় একটি ভাষাকে বাছতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে। কেন হিন্দি রাখতে হবে, প্রশ্ন তোলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। শুধু তামিলনাড়ু নয়, দক্ষিণের অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকেও একই দাবি ওঠে।