(বাঁ দিকে) গৌরব গগৈ। হিমন্ত বিশ্বশর্মা (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।
আগেই লোকসভায় কংগ্রেসের সহকারী দলনেতা গৌরব গগৈয়ের স্ত্রী এলিজ়াবেথ কলবোর্নকে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্ট বলে অভিযোগ তুলেছিলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এ বার পহেলগাঁও কাণ্ডের আবহে নতুন করে সেই বিতর্ক উস্কে দিলেন বিজেপি নেতা।
রবিবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) নাম না উল্লেখ করে একজন কংগ্রেস সাংসদকে নিশানা করে লেখেন, ‘‘আপনি কি টানা ১৫ দিন পাকিস্তানে ছিলেন? আপনার স্ত্রী কি প্রতিবেশী দেশের এনজিও থেকে বেতন পান?’’ সাংসদের স্ত্রী এবং তাঁর সন্তানদের নাগরিকত্বের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন হিমন্ত। গত বেশ কিছু দিন ধরেই লোকসভায় কংগ্রেসের সহকারী দলনেতার স্ত্রীর ‘পাক যোগ’ নিয়ে একটানা আক্রমণ শানিয়ে আসছে বিজেপি। ফলে পোস্টে কংগ্রেস নেতার নামপরিচয় উল্লেখ না-করা থাকলেও এটা স্পষ্ট যে, গগৈকে নিশানা করেই পোস্টটি করেছিলেন হিমন্ত।
প্রসঙ্গত, জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর পর থেকেই ভারতে বসবাসকারী পাকিস্তানি নাগরিকদের স্বল্পমেয়াদি ভিসা বাতিল করেছে ভারত সরকার। তাঁদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কেউ পাকিস্তানের সমর্থনে মন্তব্য করলেই শুরু হয়েছে ধরপাকড়। অসমে গত কয়েকদিনে গ্রেফতার হয়েছেন ১১ জন। তার মাঝেই গৌরবকে ইঙ্গিতপূর্ণ নিশানা করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
হিমন্ত গত ফেব্রুয়ারি মাসে গগৈয়ের স্ত্রী এলিজ়াবেথকে পাক এজেন্ট বলে অভিযোগ তোলার পর বিজেপিও একযোগে দাবি করে, এলিজ়াবেথ পাকিস্তানের পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা তৌকির শেখের অধীনে ইসলামাবাদে কাজ করেছেন। মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরসের একটি সংস্থার সঙ্গেও তাঁর যোগ রয়েছে। পাশাপাশি, এলিজ়াবেথ ভারতীয় নাগরিক নন বলেও অভিযোগ করে বিজেপি। যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে গৌরব বলেন, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ জবাবে আইনি পদক্ষেপ করার হুমকি দেয় কংগ্রেস। গগৈয়ের স্ত্রীকে ‘পরিকল্পিত’ আক্রমণের বিরুদ্ধে সরব হন কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘আমার সহকর্মী গৌরব গগৈকে নিয়ে একটি জঘন্য অপপ্রচার শুরু করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি। তাঁর চরিত্রহননের চেষ্টা চলছে। এখনই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ প্রত্যুত্তরে হিমন্তও পাল্টা জানিয়ে দেন, আইনি পথে হাঁটবে অসম সরকারও। এলিজ়াবেথের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে যাতে দ্রুত তদন্ত শুরু হয়, সে জন্য মামলা দায়ের করা হবে। গঠিত হবে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)।